অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যেই চলে মিড ডে মিলের খাওয়াদাওয়া, শতাধিক পড়ুয়াকে একাই সামলান শিক্ষিকা, বেহাল দশা রাজ্যের সরকারি স্কুলে

স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা শতাধিক। কিন্তু তাদের সামলানর জন্য শিক্ষিকার সংখ্যা মাত্র ১। জলপাইগুড়ির বানারহাট ব্লকের মোগলকাটা টি জি হিন্দি জুনিয়র হাইস্কুলের অবস্থা এমনই। এখানেই শেষ নয়, এর উপর তো রয়েছে পরিকাঠামোগত সমস্যা। স্কুলে নেই সীমানা প্রাচীর, পাশেই শ্মশান, শৌচালয় ব্যবহারের অযোগ্য, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যেই মিড ডে মিলের খাবার খেতে হয় পড়ুয়াদের। সব মিলিয়ে বেহাল দশা রাজ্যের এই সরকারি স্কুলে।
মাঠে বসে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যেই খেতে হয় মিড ডে মিল। খেলার মাঠটিও অসমতল, সেখানেই খেলাধুলা করে স্কুল পড়ুয়ারা। পানীয় জল থাকলেও তার কোন নিশ্চয়তা নেই। দূরে গিয়ে মিড-ডে মিল রান্নার জল আনতে হয়। স্কুলের বারান্দার দেওয়ালে বিপজ্জনকভাবে ঝুলছে বৈদ্যুতিক তার। যে কোনও সময় কোনও একটা দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এভাবেই নানান সমস্যা মাথায় নিয়ে বছরের পর স্কুল চলছে। মোগলকাটা চা বাগান, তোতাপাড়া চা বাগান এলাকার একমাত্র হিন্দি স্কুলের এই সমস্যা স্থানীয় প্রশাসন যে জানে না এমনটা কিন্তু একেবারেই নয়।
কিন্তু এরপরও প্রশাসন কিছু না জানার ভান করে দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর ধরে। সমস্যা সমাধানে কোনও উদ্যোগই নেয়নি। এমন আবহেই একশোর বেশি পড়ুয়া প্রতিদিন পড়াশোনা করতে আসে এই স্কুলে। তাদের নিয়ে চিন্তিত অভিভাবকরা। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবী করেছেন যাতে স্থানীয় প্রশাসন বা বাগানে স্কুলটির পরিকাঠামো উন্নয়নে ভূমিকা নিক।
স্কুলের শিক্ষিকা শকুন্তলা তিওয়ারি বলেন, “নামেই স্কুল কিন্তু স্কুলে নেই-এর সংখ্যাই অনেক বেশি। পানীয় জল, সীমানা প্রাচীর, বাথরুম কিছুই নেই। স্কুলটি আউট সাইডে হওয়ার দরুণ মোবাইল নেটওয়ার্কেরও সমস্যা আছে। এত ছাত্রছাত্রীদের একাই সামলাতে হয়”।
এই বিষয়টি স্বীকারও করে নিয়েছেন ধূপগুড়ি চার নম্বর সার্কেলের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক শেফালি ওঁরাও। তিনি বলেন, “চা বাগান এলাকার প্রায় জুনিয়র স্কুলের একই সমস্যা রয়েছে। কিন্তু শৌচালয়, ডাইনিং রুম – এগুলি স্থানীয় বিডিও অফিসে জানানো হয়েছে। তারাই উদ্যোগ নিয়ে বানিয়ে দিলে সমাধান সম্ভব। এছাড়া শিক্ষকের সমস্যা মেটানো সম্ভব নয়। তবুও কন্ট্রাক্টচ্যুয়াল শিক্ষক নেওয়ার বিষয়ে চেষ্টা চালাচ্ছি”।