‘প্রমিস ডে’র দিনই বিশ্বাসভঙ্গ প্রেমিকের! প্রেমের ফাঁদে পা দিয়ে প্রায় এক লক্ষ টাকার প্রতারণা, অবশেষে জানলেন প্রেমিকা আসলে এক পুরুষ

চারিদিকে এখন ভালোবাসার মরশুম। চলছে প্রেমের সপ্তাহ। আর কিছুদিন পরই ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’। কিন্তু আজ ‘প্রমিস ডে’র দিনই বিশ্বাসভঙ্গ হল এক প্রেমিকের। প্রেমের ফাঁদে পড়ে খোয়ালেন প্রায় লাখখানেক টাকা। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় একজনের সঙ্গে পরিচয় হয় ওই যুবকের। ধীরে ধীরে কথাবার্তা বাড়তে বাড়তে তৈরি হয় প্রেমের সম্পর্ক। ফোনে কথা হতে হতেই আদানপ্রদান হয় মনের। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনে কথা বললেও প্রেমিক ঘুণাক্ষরেও টের পান নি যে তাঁর ‘প্রেমিকা’ আসলে একজন পুরুষ। কণ্ঠ বদলে মহিলাদের কণ্ঠে কথা বলতেন প্রেমিকের সঙ্গে। আর সেই ছদ্মবেশী ‘প্রেমিকা’র চক্করে পড়ে ৯০ হাজার টাকা গচ্ছা গেল ওই যুবকের। অবশেষে ওই ‘প্রেমিকা’ মানে ওই যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন ওই যুবক।
দাসপুরের ওই যুবকের দাবী, বেশ কয়েল মাস আগে চন্দ্রকোনার এক ‘মহিলা’র সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ হয় তাঁর।। মৃদু কণ্ঠ, উষ্ণ আলাপচারিতায় ওই ‘মহিলা’র প্রেমে পড়ে যান তিনি। বেশ জমে উঠেছিল প্রেম। ফোনেই ভালবাসা নিবেদন করেন যুবক। ‘প্রেমিকা’ তা গ্রহণও করে নেন।
ভালোই চলছিল ফোনে ফোনে প্রেম। এরই মধ্যে ‘প্রেমিকা’ আবদার করেন যে তার কিছু টাকার দরকার। সেই আবদার রাখতে ধাপে ধাপে ‘প্রেমিকা’কে ৯০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন ওই যুবক। সব ঠিকঠাক চললেও মাঝে হঠাৎ ঠোক্কর। একদিন প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বার কয়েক পুরুষ কণ্ঠ শুনতে পান প্রেমিক। আর এর জেরেই সন্দেহ দানা বাঁধে প্রেমিকের মনে।
সন্দেহ কাটাতে ‘প্রেমিকা’র ভাইয়ের সঙ্গে আলাপ করার কথা ভাবেন ওই যুবক। তিনি আগেই শুনেছিলেন তাঁর ‘প্রেমিকা’র ভাই একজন মেকআপ আর্টিস্ট। সেই কারণে কনে সাজানোর নাম করে ‘প্রেমিকা’র ভাইকে ডাকেন দাসপুরে।
ভাই সেখানে পৌঁছতেই তাঁকে চেপে ধরেন যুবক। ওই মেকআপ আর্টিস্ট জানান যে ওই যুবক যাকে তিনি তাঁর দিদি ভেবে নিজের প্রেমিকা বানিয়েছেন, তিনি আসলে একজন পুরুষ। ওই মেকআপ আর্টিস্টের দাদা। সোশ্যাল মিডিয়ায় মেয়ের নামে ভুয়ো ছবি দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে এসব কাণ্ড করেছেন তিনি। মহিলার কণ্ঠে দিনের পর দিন প্রেমালাপ জমিয়ে গিয়েছেন ওই যুবকের সঙ্গে।
এই সবকিছু জানার পর যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে ওই যুবকের। বন্ধুদের ডেকে ওই ‘প্রেমিকারূপী’ যুবককে পাকড়াও করেন তিনি। এরপর তাকে তুলে দেন পুলিশের হাতে। পুলিশে লিখিত অভিযোগ করে ওই অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছেন প্রেমিক। সত্যিটা সামনে আসার পর বেশ মুষড়ে পড়েন প্রতারিত যুবক।