রাজ্য

মানবিকতা! হু হু করে নামছিল হিমোগ্লোবিনের মাত্রা, থ্যালসেমিয়ায় আক্রান্ত মরণাপন্ন শিশুকে রক্ত দিয়ে প্রাণে বাঁচাল পুলিশ

গভীর সংকটে পড়েছিল শিশুর জীবন। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুর তখন প্রায় মরণাপন্ন অবস্থা। দ্রুত কমছে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা। এমন পরিস্থিতিতে উদ্ধারকর্তা হলেন দুই পুলিশকর্মী। নিজেদের রক্ত দিয়ে প্রাণে বাঁচালেন শিশুকে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল, বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগণার ক্যানিংয়ে।

কী ঘটেছিল ঠিক?

গতকাল, বুধবার দুপুরের দিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী থানার অন্তর্গত শিমুলতলা পুলিশ ক্যাম্পের কর্মীরা নিজেদের কাজে করছিলেন। আচমকাই সেখানে হাজির রাম দেবনাথ নামের এক স্থানীয় যুবক। পুলিশ ক্যাম্পে ঢুকে হাঁপাতে হাঁপাতেই সবটা জানান তিনি।  শিমুলতলা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ সোমনাথ দাসকে তিনি বলেন, “স্যার বিপদ! উদ্ধার করতে হবে। ১০ বছরের এক শিশু থ্যালাসেমিয়ায় আক্ৰান্ত। ‘এ’ পজিটিভ গ্রুপের দুই ইউনিট রক্ত এখনই দরকার। খুবই সংকটজনক অবস্থা। রক্তে হিমগ্লোবিনের মাত্রা ২.৭ । যে কোনও মুহূর্তে বিপদ হতে পারে”।

স্থানীয় যুবকের কাছে এই কথা শুনেই নিজের সহকর্মীদের বিষয়টি জানান ইনচার্জ। তা শুনেই বাসন্তী থানার এএসআই সত্যজিৎ রায় ও কনস্টেবল অরিজিৎ সাধুখাঁ জানান তাদের রক্তের গ্রুপ এ পজিটিভ। এই বিষয়টি জানানো হয় ক্যানিংয়ের এসডিপিও দিবাকর দাসকে। ওই দুই পুলিশকর্মীকে রক্ত দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। এরপর তড়িঘড়ি ক্যানিং মহকুমার হাসপাতালে গিয়ে রক্তদান করে শিশুকে প্রাণে বাঁচান দুই পুলিশকর্মী।

সন্তানের এমন অবস্থায় যেন দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছিলেন ওই শিশুর মা। তবে এমন বিপদে পুলিশ এসে যে পাশে দাঁড়াবেন, তা ভাবতেই পারেন নি মহিলা। তিনি বলেন, “আমার ছেলে থ্যালাসেমিয়ায় আক্ৰান্ত। মঙ্গলবার আচমকাই ছেলের শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। সমস্ত শরীর ফুলে যেতে থাকে। রক্ত না পেলে আমাৱ ছেলেকে বাঁচানো যেত না। ওঁদের কাছে আমি চিরদিন কৃতজ্ঞ থাকব”।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে এসডিপিও দিবাকর দাস বলেন, “কেউ যদি বিপদে পড়ে, পুলিশ সাধ্যমতো তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করে”।

Back to top button
%d bloggers like this: