রাজ্য

পুকুর খুঁড়তে গিয়ে মাটির নীচ থেকে উদ্ধার ৯০০ বছরের পুরনো দুর্মূল্য ৩টি বিষ্ণুমূর্তি, প্রবল চাঞ্চল্য এলাকাজুড়ে

পুকুর খোঁড়ার জন্য মাটি খোঁড়া হচ্ছিল। সেই সময়ই ঘটল চমকপ্রদ ঘটনা। মাটির নীচ থেকে উঠে এল ৯০০ বছরের পুরনো কষ্টি পাথরের বিষ্ণুমূর্তি। একথা জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায় গোটা এলাকায়। এই বিষ্ণুমূর্তি তুলে দেওয়া হয় ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাস্টের অ্যাডমিনিস্ট্রেট জেনারেল বিপ্লব রায়ের হাতে।

কী ঘটেছে গোটা ঘটনাটি?

ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার নাকাশিপাড়া থানা এলাকার গাছাবেজপাড়া এলাকায়। জানা গিয়েছে, ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা পুসি সরদারের বাড়িতে পুকুর খুঁড়তে গিয়ে গত ১৪ মার্চ মাটির নীচ থেকে উদ্ধার হয় এই কষ্টি পাথরের তিন বিষ্ণুমূর্তি। তা নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয় এলাকায়, স্থানীয়দের পরামর্শে ওই মূর্তিগুলি নিজের বাড়িতে স্থাপন করেন পুসি সর্দারের পরিবার। শুরু হয় নিত্য পূজা-অর্চনা। সেই মূর্তি দেখতে দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসতে থাকে পুসি সর্দারের বাড়ি।

এই খবর পেয়ে নাকাশিপাড়ার পুলিশ পুসি সর্দারের বাড়ি থেকে মূর্তিগুলি নিয়ে এসে নিজেদের হেফাজতে রাখে। থানাতেই রাখা হয় মূর্তিগুলি। এরপর নিয়ম অনুযায়ী এই মূর্তিগুলির খবর দেওয়া হয় ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাস্টের অ্যাডমিনিস্ট্রেট জেনারেলকে। তাঁর হাতেই তুলে দেওয়া হয় ওই তিন বিষ্ণুমূর্তি।

কী জানাচ্ছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাস্টের অ্যাডমিনিস্ট্রেট জেনারেল?

ট্রাস্টের এজি বিপ্লব রায়ের কথায়, “প্রাথমিকভাবে উদ্ধার হওয়া মূর্তিগুলি আনুমানিক হাজার বছর প্রাচীন পাল বংশের রাজাদের রাজত্বকালের শেষের দিকের হতে পারে। পাশাপাশি মূর্তিগুলি বহু মূল্যবান কষ্টিপাথরের তৈরি। ভারতীয় মুদ্রায় যার আনুমানিক বাজার মূল্য কমপক্ষে ৮ থেকে ২০ কোটি টাকারও বেশি”।

কোথায় রাখা যবে মূর্তিগুলি?

বিপ্লব রায় জানিয়েছেন, “প্রাথমিকভাবে মূর্তিগুলি মিউজিয়ামে সংরক্ষণ করা হবে। এবং পরবর্তী সময়ে এগুলি প্রদর্শন করার পাশাপাশি ইতিহাসবিদদের গবেষণার কাজে ব্যবহার করা হবে। ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে বিচার করতে গেলে মূর্তিগুলির নির্মাণশৈলীতে হিন্দু এবং বৌদ্ধধর্মের ছাপ মিলেছে বলেও জানান তিনি। যা একেবারেই নজিরবিহীন ঘটনা”। ইতিহাসবিদরা আশা করছেন, এই মূর্তিগুলি থেকে প্রাচীন পালবংশের ইতিহাস, সেই সময়কার সংস্কৃতি, জীবনশৈলী, ধর্ম, আচার-অনুষ্ঠান সম্পর্কে নতুন তথ্য জানা যাবে।

Back to top button
%d bloggers like this: