মাতৃদিবসে মা পুজো! মায়ের পা ধুয়ে পায়েস খাইয়ে দিল পড়ুয়ারা, অভিনব উদ্যোগ জলপাইগুড়ির স্কুলে

গতকাল, রবিবার ছিল মাতৃদিবস। হ্যাঁ, মায়েদের যত্ন করার জন্য বা ভালোবাসার জন্য একটা কোনও বিশেষ দিনের দরকার পড়ে না ঠিকই। কিন্তু এই একটা দিনেই যদি আমরা মা-কে বোঝাতে পারি, আমরা তাঁকে কতটা ভালোবাসি, তাই-ই বা কম কীসের! কারণ মা ছাড়া যে কোনও সন্তানই অচল। মা-কে ছেড়ে থাকা মানে জীবনে এক ঘোর অন্ধকারের মধ্যে থাকা।
সেই কারণেই এই মাতৃদিবসে মায়েদের জন্য এক বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হল জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি বারঘড়িয়া স্বর্ণাময়ী বটতলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। মাতৃদিবস উপলক্ষ্যে মা পুজো করল খুদেরা। মায়েদের পা ধুইয়ে পায়েস খাইয়ে দিল তারা।
এদিন ধূপগুড়ি ব্লকের বারঘড়িয়া স্বর্ণময়ী বটতলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা গেল মায়েরা চেয়ারে সারিবদ্ধভাবে বসে রয়েছেন। তাদের সামনে নিচে বসে রয়েছে তাদের সন্তানরা। প্রথমে মায়েদের পা ধুইয়ে মুছে দেয় তারা। এরপর হাতজোড় করে শপথ বাক্য পাঠ করান স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয় বসাক।
পড়ুয়ারা বলে, “আমি সারাজীবন মা- বাবাকে ভালবাসব। দেখাশোনা করব”। এরপর সন্তানরা মায়েদের পায়েস খাইয়ে দেয়। আবার সন্তানদেরও পায়েস খাইয়ে দেন মায়েরাও।
জানা গিয়েছে, গোটা পৃথিবীর মধ্যে শুধুমাত্র ইন্দোনেশিয়াতেই নানান স্কুলে মায়েদের পুজো দেওয়ার রীতি রয়েছে। আর ভারতের মধ্যে একমাত্র জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি ব্লকের এই স্কুলে এই রীতি পালন করা হয় বলে জানিয়েছে ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ। এই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক জয় বসাক এই বিষয়ে বলেন, “আমি একটি পত্রিকায় পড়েছিলাম ইন্দোনেশিয়ার প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ের এই ধরনের অনুষ্ঠান করা হয় এবং সেখানে কোনও বৃদ্ধাশ্রম নেই। তারপর আমি সিদ্ধান্ত নিই আমাদের বিদ্যালয় এই ধরনের অনুষ্ঠান করব। প্রতিবছর আমরা এধরণের অনুষ্ঠান করব। এবছর দ্বিতীয়”।
স্কুলের এমন এক উদ্যোগে খুব খুশি মায়েরা। সন্তানদের থেকে এমন ভক্তি-শ্রদ্ধা চোখে জল এনে দেয় অনেক মায়ের। মায়েদের কথায়, “কোনওদিন ভাবতেই পারিনি আমাদের ছেলেমেয়েরা আমাদের পুজো করবে। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগে সেটা হল। এই যুগে দেখা যায় সন্তানদের কাছে প্রতারণা, নির্যাতনের শিকার হন বাবা-মা। সেখানে এই উদ্যোগ, ভাবাই যায় না”। স্কুলের এই অভাবনীয় উদ্যোগে খুব খুশি পড়ুয়ারাও।