রাজ্য

যেন অন্য এক শান্তিনিকেতন! স্কুলের দেওয়ালেই আঁকা গোটা সহজপাঠ, পড়ুয়াদের পড়াশোনার প্রতি আকর্ষণ বাড়াতে অভিনব উদ্যোগ শিক্ষকের

কোথাও আঁকা ‘ছোটো খোকা বলে অ আ’, তো কোথাও আবার লেখা ‘আমাদের ছোটো নদী চলে আঁকেবাঁকে’। ভাবছেন তো এই চেনা দৃশ্য তো সহজপাঠ বই খুললেই দেখা যায়। তবে দেওয়াল জুড়ে যদি কেউ গোটা সহজপাঠটাই এঁকে দেন, তাহলে ব্যাপারটা কেমন হবে বলুন তো! হ্যাঁ, দেওয়ালেই গোটা সহজপাঠ ধরা পড়ল বাঁকুড়া রায়পুর দক্ষিণ চক্রের পাঠগড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

নিরলস পরিশ্রম করে স্কুলের প্রতি পড়ুয়াদের আকর্ষণ বাড়াতে ও স্কুল ভীতি কমাতে এক অভিনব উদ্যোগ দিলেন সংশ্লিষ্ট স্কুলের সহকারী শিক্ষক বিশ্বজিৎ মণ্ডল। স্কুলের প্রাঙ্গণের দেওয়াল জুড়ে সহজপাঠের নানান লেখা, কবিতা এঁকে দিলেন তিনি। হঠাৎ করে দেখলে মনে হবে যেন সহজপাঠের মলাট। গোটা স্কুল চত্বরে এমন নান্দনিক দৃশ্য দেখলে মন ভরে উঠবেই।

সহকারী শিক্ষক বিশ্বজিৎ মণ্ডল বিনা পারিশ্রমিকেই স্কুলের দেওয়ালে এমন তথ্যচিত্র এঁকেছেন। স্কুল পড়ুয়াদের সচেতনতামূলক বার্তা দিতে ও তাদের স্কুলের প্রতি আকর্ষিত করতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছেন ওই শিক্ষক। এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন গ্রামবাসী-সহ পড়ুয়ারাও। পড়ুয়াদের কথায়, “স্কুল ছেড়ে আমাদের বাড়ি যেতে ইচ্ছে করে না, স্কুল কামাই করা তো দূরস্ত।”

শিক্ষক বিশ্বজিৎ মণ্ডল আমাদের জানান, তিনি স্কুলটাকে সম্পূর্ণ নিজের ভেবেই এই কাজে করেছেন। তাঁর এই কাজে তাঁকে ব্যাপকভাবে সাহায্য করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। সহকারি শিক্ষক বিশ্বজিৎ মণ্ডল জানান, “যেভাবে পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলি ‘মডেল বিদ্যালয়ের’ স্বীকৃতি পাচ্ছে সেই ভাবে তারও এই স্কুল মডেল বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পাক”।  

অভিভাবকদের মতে, পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেকটা স্কুল এরকম একটা করে বিশ্বজিৎ মণ্ডলের মতো শিক্ষক পায় তাহলে হয়তো প্রত্যেকটা শিক্ষাঙ্গন মডেল স্কুল হয়ে উঠতে পারে।

এক অভিভাবকের কথায়, “স্কুলের পড়াশোনার পাশাপাশি এরকম সুন্দর সাজানো শিক্ষাঙ্গন দেখলেই বাচ্চারা নিজে থেকে স্কুলে আসতে চায়। আমাদের জোর করতে হয় না। অনেক ক্ষেত্রে বাচ্চারাও তাঁদের শিক্ষকের সঙ্গে স্কুল সাজিয়ে তোলার কাজে হাত লাগায়। আমাদেরও ভালো লাগে এরকম একটা স্কুলে বাচ্চাকে ভর্তি করে। এই স্কুল আগামী দিনে মডেল স্কুল হোক, আমরা চাই”।

Back to top button
%d