উলাটপুরাণ! র্যাগিং রোখার জন্য হাত বাড়ালেন কলেজের সিনিয়ররাই, র্যাগিং বিরোধী প্রচার, অভিনব ‘ওয়েলকাম’ আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় গোটা রাজ্য তোলপাড়। এই ঘটনায় র্যাগিং তত্ত্ব উঠে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্তের রিপোর্ট বলছে র্যাগিংয়ের জেরেই মৃত্যু হয়েছে ওই ছাত্রের। এমন অবস্থায় অনন্য নজির গড়ল আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। র্যাগিং বিরোধী প্রচারে এগিয়ে এল খোদ সিনিয়ররাই।
কী উদ্যোগ নেওয়া হল সিনিয়রদের তরফে?
সদ্য স্কুল ছেড়ে কলেজে ভর্তি হওয়া প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়ালেন আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়ারা। আজ, শনিবার কলেজে ক্যাম্পাসে নবীনদের বরণ অনুষ্ঠান ছিল। সেখানেই সিনিয়রদের তরফে নবীন পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া হয় বিশেষ ‘ওয়েলকাম কার্ড’।
ওই কার্ডে রয়েছে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির ফোন নম্বর ও হোয়াটস্যাপ গ্রুপের কিউআর কোড। কিউআর কোড স্ক্যান করে সহজেই সংশ্লিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যোগ দিতে পারবেন পড়ুয়ারা। সেখানে সবধরনের অভিযোগ জানাতে পারবেন। পাবেন সমাধানও। প্রয়োজন পড়লে সরাসরি ফোনেও কথা বলে নিতে পারেন।
কী জানালেন সিনিয়ররা?
কলেজের সিনিয়রদের মতে, “আমরা কোনওদিন র্যাগিংকে সমর্থন করি না। এখানে এসব হয় না। তবে যাদবপুরের ঘটনাটার পর থেকে নতুন ভরতি পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকরা একটু আতঙ্কিত। আমরা তাই জুনিয়রদের সবরকমভাবে বোঝানোর চেষ্টা করছি যে আমরা ওদের পাশে আছি, সঙ্গে আছি। কেউ যাতে অকারণে ভয় না পায়, তাও বলছি। আমরা এখানে হস্টেলে সবাই মিলেমিশে থাকি। জুনিয়রদেরও তা বলেছি। ওরাও যাতে একসঙ্গে মিলেমিশে থাকে। আর কোনও অসুবিধা হলে ওই ওয়েলকাম কার্ডে কিউআর কোড স্ক্যান করে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যোগ দিয়ে সেখানে জানাতে পারে। এছাড়া অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির ফোন নম্বরও দেওয়া আছে। সেখানেও সবসময় ফোন করা যাবে”।
এই উদ্যোগে খুব খুশি জুনিয়ররাও
তাদের কথায়, “দাদারা খুব সমর্থন করেছে আমাদের। যাদবপুরের ঘটনার পর হস্টেলে এসে খুব চিন্তা হচ্ছিল, আমাদের সঙ্গেও যদি এরকম হয়। কিন্তু দাদারা খুব ভাল। আমাদের বুঝিয়েছে, ভরসা দিয়েছে। ওয়েলকাম কার্ড দিয়েছে। তাতে কিউআর কোড দেওয়া, স্ক্যান করে নিজেদের অভিযোগের কথা জানানো যাবে”।
সিনিয়রদের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন কলেজের অধ্যাপকরাও। খুশি নবাগত পড়িয়াদের অভিভাবকেরাও। তারা বলছেন, “রাজ্যের সর্বত্র কলেজগুলিতে এমন পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। তবেই যাদবপুরের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধ করা সম্ভব হবে”।