‘কোনও গুরুত্ব দেয়নি তৃণমূল’, লোকসভা ভোটের প্রাক্কালেই বড় ভাঙন ঘাসফুল শিবিরে, তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন মন্ত্রী ফিরহাদের জামাই

সামনেই লোকসভা নির্বাচন। এর আগে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিই যখন সংগঠনকে আরও মজবুত করার চেষ্টায় রয়েছে, সেই সময় দাঁড়িয়ে বড় ভাঙন দেখা দিল শাসক শিবিরে। তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের জামাই ইয়াসির হায়দর। আজ, শনিবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর হাত থেকে দলীয় পতাকা তুলে নেন তিনি। যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক পদে ছিলেন ইয়াসির।
ফিরহাদ হাকিমের মেয়ে প্রিয়দর্শিনীর স্বামী ইয়াসির। তবে শোনা যায়, ইদানিং প্রিয়দর্শিনীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। কয়েক বছর আগে ইয়াসিরের বিদেশ যাওয়া আর সেই সফরে এক অভিনেত্রীর সঙ্গী হওয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। একাধিকবার বিদেশ গিয়েছেন ইয়াসির। তাঁর মারফত বিদেশে টাকা পাচার হয়েছে বলে অভিযোগও ওঠে। সেই নিয়ে প্রিয়দর্শিনীকে নোটিশও দিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তবে ইয়াসিরের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।
দলবদলের পর কী বললেন ইয়াসির?
ইয়াসিরের দাবী, তৃণমূল তাঁকে কোনও গুরুত্ব দেয়নি। দলবদলের পর তিনি বলেন, “২০২১ সালে আমাকে টিকিট দেয়নি তৃণমূল। সে বছর মার্চ মাসে তৃণমূল ছেড়ে দিয়েছিলাম। তারপর থেকে সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলাম না। কিন্তু এখন ফের জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করতে চাই। আমি কৃতজ্ঞ যে কংগ্রেস আমাকে সেই সুযোগটা দিচ্ছে। আমি অধীর চৌধুরীকে দেখে অনুপ্রাণিত হই। জাতীয় কংগ্রেসের কর্মী হিসাবে কাজ করতে চাই”।
ইয়াসির হায়দরের এই তৃণমূলে ছাড়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বেশ গুঞ্জন ছড়িয়েছে। কারণ একদিকে তিনি যেমন রাজ্যের মন্ত্রীর আত্মীয়, অন্যদিকে আবার তিনি এমন একটা সময় দল ছাড়লেন, যখন সামনেই লোকসভা ভোট। ফলে নির্বাচনের আগে শাসকদল বেশ বড় ধাক্কা খেল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
যদিও এই বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে নারাজ ববি হাকিম
জামাইয়ের দলবদল নিয়ে ফিরহাদ সাফ জানালেন, “আমার মনে হয় এবার কংগ্রেস দলটাই উঠে যাবে। যাঁরা আত্মীয়স্বজন নিয়ে কারবার করেন, তাঁরা দল করেন না। যদি কেউ নেতা হন, তখন কি তাঁর পরিচয় হতে পারে তিনি ফিরহাদ হাকিমের লোক? এরা হল আগাছা-পরজীবী”।
বলে রাখি, একুশের বিধানসভা ভোটের সময় টিকিট না পেয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন ইয়াসির হায়দর। ফেসবুকেও পোস্ট করেছিলেন তিনি। তখন থেকেই বিদ্রোহী হিসাবে পরিচিত ফিরহাদের জামাই। সেই সময় তাঁর বক্তব্য ছিল, যারা দিনরাত দলের জন্য কাজ করেন, তাঁদের কেউ পাত্তা দেন না। ভুঁইফোড় সেলিব্রিটিরা এসে টিকিট পেয়ে যান। এবার লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে ঠেকানো গেল না ইয়াসিরকে।