রাজ্য

অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার পথে কাঁটা রাজ্য পুলিশ, তৃণমূল কর্মীর গলা টিপে ধরার মামলায় ৭ দিনের পুলিশি হেফাজত কেষ্টর

এবার রাজ্য পুলিশের (West Bengal Police) হাতে গ্রেফতার (arresta) অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)। এক তৃণমূল কর্মীকে মারধরের কারণে গ্রেফতার করা হল বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতিকে। এক বছর আগেকার ঘটনায় গতকাল, সোমবার থানায় অভিযোগ দায়ের করে ওই তৃণমূল কর্মী (TMC worker)। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতারি।  

আজ, মঙ্গলবার সকাল সকাল অনুব্রতকে নিয়ে যাওয়া হয় দুবরাজপুর আদালতে। সূত্রের খবর, অনুব্রতকে সাতদিনের জেল হেফাজত দিয়েছে আদালত। এজলাসেই রয়েছেন কেষ্ট। আইন অনুযায়ী, তাঁকে দুবরাজপুর থানায়, সিসিটিভির আওতায় পুলিশের হেফাজতেই থাকতে হবে। আগামী ২৭ তারিখ ফের অনুব্রতকে আদালতে পেশ করা হবে। এদিন অনুব্রতর জামিনের আবেদন জানাননি কেউ। 

গতকাল, সোমবারই দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত রায় দিয়েছে যে ইডি অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে গরু পাচার মামলায় জেরা করতে পারে। আর ঠিক এর পরদিনই রাজ্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন অনুব্রত। স্বাভাবিকভাবেই জল্পনা তৈরি হয়েছে যে দিল্লি যাওয়া ঠেকাতেই এমন একটি ঘটনা ঘটানো হয়েছে? এই নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। তবে আপাতত কেষ্টকে সাতদিনের মধ্যে আর নিজেদের হেফাজতে নিতে পারবে না ইডি। 

প্রসঙ্গত, দুবরাজপুরের মেজে গ্রামের বাসিন্দা শিবঠাকুর মণ্ডল। তিনি বালিজুড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান ছিলেন। তাঁর বক্তব্য, দল যথাযথ সম্মান দিচ্ছিল না তাঁকে। সেই  কারণে একুশের বিধানসভা ভোটের সময় তিনি ভেবেছিলেন অন্য দলে যোগ দেবেন। শিবঠাকুর মণ্ডলের কথায়, “দুবরাজপুর পার্টি অফিসে আমাকে ডেকে পাঠিয়ে বলেন তুই অন্য দলে যাবি কেন? আমি বললাম, দাদা আমি এই দলে কোনও মানসম্মান পাই না। তখন আমাকে গলা টিপে ধরে এবং প্রাণে মারার চেষ্টা করে। আমি দাদার হাতে পায়ে ধরে রক্ষা পাই। তখন থেকেই এটা আমার মাথায় ছিল। আজ সুযোগ এসেছে। কেষ্টদা জেলে, তাই অভিযোগ করলাম। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি”।

শিবঠাকুরের কথায়, “আমি এখনও টেনশনে রয়েছি। আমাকে কখন কে আঘাত করবে বলতে তো পারছি না। বাড়িতেই আছি। সোমবার অভিযোগ করি”। কিন্তু এতদিন পর কেন অভিযোগ দায়ের? শিবঠাকুরের ব্যাখ্যা, “অনুব্রত মণ্ডলের নামে কেস করা তো কঠিন ব্যাপার। আমি এখন সুযোগ পেলাম যেহেতু জেলে আছেন। আমি তৃণমূলেই আছি। তবে দল না করার মতোই”।

এই বিষয়ে বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, “এত বোকা বোকা খেলা হাসি পায়। এতো খুনের মামলা বা গাঁজা মামলা দিলে তাও আটকাতে পারত। এই কেসে তো কোর্ট একটু পরেই জামিন দিয়ে পাঠিয়ে দেবে। কত ভয় একটা সরকারের সেটাই দেখছি। অনুব্রত মুখ খুললে শুধু অনুব্রত নয়, তার মেন্টররাও জেলে যাবে। তাই নিজেদের বাঁচাতে একটা বোকা বোকা প্রয়াস”।

অন্যদিকে, এই ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা বিকাশ ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “এরা দুর্নীতির এতটাই গভীরে পৌঁছে গিয়েছে, যে কোনও তদন্তকেই ভয় পাচ্ছে। যে চেষ্টা এরা করছে, তা যে কোনও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে হাস্যকর বলে মনে হবে। যে মামলায় তাঁকে তোলা হচ্ছে, তার কোনও গুরুত্ব আছে কি না, কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ আছে কি না এসব তো বিচার করতে হবে।  বিচারকও গুরুত্ব উপলব্ধি করে ওদের এই প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দেবে”।

Back to top button
%d bloggers like this: