রাজ্য

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে যত না বোমাবর্ষণ হয়েছিল বাংলায় তার চেয়ে বেশি বিস্ফোরণ হয়েছে, এগরার পর বজবজে বিস্ফোরণের ঘটনায় তোপ শুভেন্দুর

এগরার পর এবার বজবজ। সেখানেও বেআইনি বাজি তৈরির কারখানায় ঘটে বিস্ফোরণ। রবিবার সন্ধ্যের এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে এক নাবালিকা-সহ ৩ জনের। আর এই নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়ে গিয়েছে। বিরোধীদের দাবী, রাজ্যের বেআইনি বাজি তৈরির কারখানাগুলির বিরুদ্ধে রাজ্য কোনও পদক্ষেপ করে না। এই নিয়ে টুইট করে শাসক দলকে একহাত নিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে আনলেন তিনি।

বজবজের নন্দরামপুর দাসপাড়ার বাজি কারখানায় গতকাল, রবিবার সন্ধ্যেয় ঘটে বিস্ফোরণ। এই নিয়ে গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এই ঘটনার তদন্তে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। বারুদের স্তূপ উদ্ধার হয়েছে সেখান থেকে। পুলিশ সূত্রে খবর, মহেশতলা থেকে ২০ হাজার কেজি নিষিদ্ধ শব্দবাজি ও বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের দাবী এসবই নিষিদ্ধ বাজি। এই ঘতবায় এখনও পর্যন্ত ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এই ঘটনার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের তুলনা টেনেছেন শুভেন্দু। টুইট করে তিনি এও লিখেছেন, “পোড়া মাংসের গন্ধ এবং বিস্ফোরণের চিহ্ন এখনও রয়েছে এগরার গ্রামে। আহতেরা এখনও আশঙ্কাজনক অবস্থায়। এর মধ্যেই বজবজের গ্রামে ঘটল বিস্ফোরণের ঘটনা। এখনও অবধি ৩জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বার বার এ কথা শুনতে লাগলেও, এই ঘটনাতেও এনআইএ তদন্ত দরকার”।

তৃণমূল সরকারকে নিশানা করে শুভেন্দু লিখেছেন, “মমতা সরকার কখন জাগবে? পোড়া মাংসের গন্ধ কবে নাকে যাবে? আর কত জনের মৃত্যু প্রয়োজন হবে”? শুধু তাই-ই নয়, এই টুইটের মাধ্যমে পুলিশের বিরুদ্ধে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগও করেছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।

শুভেন্দুর এই আক্রমণাত্মক টুইটের পাল্টা জবাব দিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ তামিলনাড়ুর বিখ্যাত বাজি প্রস্তুতকারক জেলা শিবকাশীর কথা উল্লেখ করে বলেন, “সেখানেও তো বিস্ফোরণ হয়। সুতরাং, বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ হওয়া দুর্ঘটনা মাত্র। সবসময়ে এর সঙ্গে অন্য কিছু জড়ালে হবে না। বাংলায় বাজি তৈরি একটা কর্মসংস্থান। কিন্তু দেখতে হবে এই যে বিস্ফোরক উদ্ধার হচ্ছে, এগুলো কি হিসেবের বাইরে ছিল”?

বজবজের ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “এটা আজ নয়, দীর্ঘদিন ধরে চলছে। বেশিরভাগ বাজি কারখানা বেআইনিভাবে চলছে। তাদের যা নিয়ম-কানুন সে গুলো মানা হয় না। এটা সবাই জানে। পুলিশও জানে। সরকারও জানে। ভালো আয় আছে তাই এটাকে করতে বাধা দেওয়া হয় না। বেশিরভাগ গরিব লোকেরা সেখানেই কাজ করেন। যেখানে বাজি কারখানা সেখানে ভয়ের পরিবেশ থাকে। আমি এগরাতে গিয়েছিলাম। সব মহিলারা সেখানে কাজ করতেন খুব সাধারণ গরিব পরিবারের। মহিলা যাদের দেহ পাওয়া গেছে তাদের সবার বাড়িতে ছোট ছোট বাচ্চা। তাদের দেখে খুবই কষ্ট হয় যে এই বাচ্চা গুলিকে কে দেখবে। অনাথ হয়ে গিয়েছে। কান্নাকাটির রোল পড়ে গেছে বাড়ি বাড়িতে। এটা বারবার হচ্ছে। তার পরেও সরকার কেন সচেতন হচ্ছে না আমি বুঝতে পারছি না। পুলিশ জানে না এমন নয়। সব জায়গায় টাকা খাওয়ার একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। কোনওদিনই এ সবের সমাধান হবে না”।

Back to top button
%d bloggers like this: