প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ধরেছিলেন সোনার দোকানের ডাকাত, রাণাঘাটের সেই ‘হিরো’ পুলিশকর্মীকে পুরস্কৃত করলেন পুলিশ সুপার

সোনার দোকানের ডাকাতদের পিছনে ভারী শরীর ও জং ধরা বন্দুক হাতেই ছুটেছিলেন তিনি। দুষ্কৃতীদের থেকে আসা গুলিকে উপেক্ষা করে পাল্টা গুলিও চালান। সেই দৃশ্য দেখে মনে হয়েছিল যেন কোনও এক অ্যাকশন সিনেমা চলছে। এবার এমন দুঃসাহসিক কাজের জন্য রাণাঘাটের সেই হিরো এএসআই রতনকুমার রায়কে পুরস্কৃত করলেন রাণাঘাটের পুলিশ সুপার।
পুলিশ দিবসে রানাঘাটের সোনার দোকানে ডাকাতির পর দুষ্কৃতীদের ধরার ক্ষেত্রে অসামান্য সাফল্যের পর রানাঘাট থানার পাঁচজন পুলিশ অফিসারকে পুরস্কৃত করলেন রানাঘাট জেলার পুলিশ সুপার কে কন্নন। রানাঘাট থানার আইসি সঞ্জীব সেনাপতি এস আই রতন রায়, আলতাফ হোসেন, সাব ইন্সপেক্টর জয়ন্ত ঠাকুর এবং মলয় সাহাকে এদিন সংবর্ধনা দেওয়া হল।
কে এই রতনকুমার রায়?
তাঁর চেহারা ভারির দিকে। ওজন ১০০-র বেশি। যা নিয়ে মাঝেমধ্যেই বন্ধুদের মহলে কটাক্ষের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। কিন্তু মনের সাহস আর কাজ করতে চাওয়ার ইচ্ছেটাই যে শেষ কথা, চেহারা যে কোনও প্রতিবন্ধকতা নয় তা মঙ্গলবার বিকেলে প্রমাণ করে দিয়েছেন রতনবাবু। পুলিশি রিভলবার নিয়েই ছুটে গিয়েছিলেন দুষ্কৃতীদের ধরতে। তাঁর সাহসিকতাতেই উদ্ধার হয়েছে প্রচুর সোনা-গয়না।
অভিযানের পর রতন কুমার রায় বলছেন, খবর পাওয়ার পর ডাকাতদের পালাতে না দেওয়াটাই প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশের সম্মান রক্ষার বিষয়টিও তাঁর মাথায় ঘুরছিল। তাই ভয় পাননি। ডাকাতদের পিছনে ধাওয়া করার সময় শুধু মনে হচ্ছিল গুলি যেন শেষ না হয়ে যায়। এএসআইয়ের দাবি, নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সব পুলিশের এধরনের কাজে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
পুলিশের ফিটনেস নিয়ে বারে বারে প্রশ্ন ওঠে। ওজন কমাতে নানা ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরের রতনবাবুর ডাকাতদের ধাওয়া করার অভিযান যেন ফিটনেস নিয়ে ওঠা সব প্রশ্নকে নস্যাৎ করে দিয়েছে। তিনি একাই দুষ্কতীদের গুলির প্রত্যত্তুর দিয়েছেন জং ধরা রিভলভার দিয়ে। চেহারা যাই হোক তাঁর অব্যর্থ লক্ষভেদ ঘায়েল করেছে দুটি ডাকাতকেও। ধরে পড়েছে দলের পাঁচ দুষ্কৃতী।