আটকে রাখার চেষ্টা! ‘অভিমানী’ তাপস রায়কে বড় দায়িত্ব দিল তৃণমূল, সুদীপের সঙ্গে দ্বন্দ্ব মেটানোর চেষ্টা নাকি মানভঞ্জন?

তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব (TMC inner clash) দিনদিন প্রকাশ্যে এসেই চলেছে। সেই দ্বন্দ্ব চরমেও পৌঁছেছে। বরানগরের বিধায়ক তাপস রায় (Tapas Roy) ও উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Sudip Banerjee) মধ্যেকার সম্পর্কে যে তলানিতে, তা সকলের জানা। সেই কারণেই হয়ত উত্তর কলকাতার জেলা তৃণমূল সভাপতির পদ হারানোর ব্যাথায় এবার মলম দেওয়ার চেষ্টা তৃণমূলের। বর্ষীয়ান নেতা তাপস রায়ের হাতে এবার দমদম-ব্যারাকপুরের (Dumdum-Barrackpore) মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকার দায়িত্ব তুলে দিল দল। দমদম-ব্যারাকপুর জেলা সভাপতি হলেন তিনি। সেই হিসেবে দেখতে গেলে এই এলাকায় সৌগত রায়ের পরই সর্বেসর্বা হলেন তাপস রায়।
একুশের ভোটে জিতলেও দমদম-ব্যারাকপুর এলাকায় অন্তর্দ্বন্দ্ব সহ নানান সমস্যা রয়েছে। অর্জুন সিং দলে ফেরত এলেও ওই এলাকায় তৃণমূলের আধিপত্য নিরঙ্কুশ নয়। সেই কারণে সংগঠন চালানোর জন্য অভিজ্ঞ ও প্রাজ্ঞ রাজনৈতিক মস্তিষ্কের প্রয়োজন। আর এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে এই কাজের জন্য দলের প্রথম পছন্দ তাপস রায়ই।
মন্ত্রিসভায় রদবদলের সময় থেকে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল যে তাপস রায় হয়ত কোনও বড় দায়িত্ব পাবেন। কিন্তু তেমনটা হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাপস রায়ের দ্বন্দ্বের জেরেই দলের তোপের মুখে পড়েছিলেন বিধায়ক। মুখে কোথাও অসন্তোষ প্রকাশ না করলেও একসময় রাজনৈতিক সন্ন্যাসের কথাও ভাবনা চিন্তা করছিলেন তাপস রায়। তবে এবার বঙ্গ রাজনীতির ময়দানে শাসক দলের বেশ গুরুত্বপূর্ণ পদে এবার দেখা মিলবে তাপস রায়ের।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে জেতার পর উত্তর কলকাতার জেলা তৃণমূল সভাপতি হয়েছিলেন তাপস রায়। কিন্তু শীর্ষ নেতা বা বলা ভালো সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কারণেই পদ খোয়া যায় তাঁর। এরপর থেকেই দুই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের মধ্যে মামলা উত্তপ্ত হয়। তাদের দু’জনের বাকবিতণ্ডার কথা কারোর অজানা নয়। পুজোর সময় আবার বিজেপি নেতা তমোঘ্ন ঘোষকে নিয়েও শুরু হয় দ্বন্দ্ব। তমোঘ্ন ঘোষ সুদীপের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত।
এরপর থেকেই নানান ইস্যু নিয়ে একে অপরকে শানাতে কসুর করছিলেন না সুদীপ বা তাপস, কেউই। এর জেরে দলের তিরস্কারের পাত্র হলেও এবার দলই তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসাল। এটা কী দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব অবসান করার জন্য নাকি নেতার মানভঞ্জনের জন্য, এখন সেটাই প্রশ্ন ওয়াকিবহাল মহলের।