ফের রণক্ষেত্র ভাঙড়, ‘আইএসএফ-কে মনোনয়ন দিতে দেব না, নওশাদের চামড়া তুলে নেব’, হুমকি তৃণমূলের, হাঁসুয়া দিয়ে কোপের চেষ্টা সাংবাদিককে

গতকালের পর আজ, মঙ্গলবার ফের নতুন করে উত্তপ্ত হল ভাঙড়। ১৪৪ ধারা জারি সত্ত্বেও বুধবার সকালে লাঠিসোঁটা, বাঁশ হাতে নিয়ে বিডিও অফিসের সামনে দেখা গেল তৃণমূল কর্মীদের। ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে হুমকি শানানো হয়। উত্তেজনার ঘটনায় আক্রান্ত সংবাদমাধ্যমের কর্মীরাও।
বিগত কয়েকদিন ধরেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের জেরে রণক্ষেত্রের আকার নিয়েছে রাজ্যের বেশ কিছু এলাকা। গতকাল, মঙ্গলবার মনোনয়ন পেশকে কেন্দ্র করে রীতিমতো যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল ভাঙড়, চলে দেদার বোমাবাজি। চলেছে গুলিও। জখম হন একাধিক। আরাবুল ইসলামের ছেলের গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বোমা। গতকাল সাময়িকভাবে পরিস্থিতি শান্ত হলেও, আজ, বুধবার ফের উত্তপ্ত হয় ভাঙড়।
এদিন সকাল ১০টা নাগাদ বাসন্তী বিডিও অফিসের সামনে হাতে বাঁশ, লাঠি নিয়ে জমা হয় একদল যুবক। নিজেদের তৃণমূল কর্মী বলেই পরিচয় দেয় তারা। তাদের অভিযোগ, নওশাদ সিদ্দিকির নেতৃত্বে আইএসএফ কর্মীরা বাসন্তী হাইওয়ের ওপর বোমাবাজি করেছে, তাই তারা এই এলাকায় জমা হয়েছে। কিন্তু মনোনয়ন কেন্দ্রের ১০০ মিটারের ব্যাসার্ধের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে, তার কী? এর কোনও উত্তর মেলেনি।
ভাঙড়ের যে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি, অর্থাৎ মনোনয়ন কেন্দ্র সংলগ্ন এক কিলোমিটার এলাকার মধ্যেই দেখা গেল লাঠি হাতে প্রচুর তৃণমূল কর্মীকে। সকলের মুখ বাধা, হাতে লাঠি, বাঁশ। তৃণমূলের সাফ কথা, নওশাদের লোকদের মনোনয়ন পেশ করতে দেওয়া হবে না। এক তৃণমূল নেতা বলেন, “নওশাদ তাণ্ডব করেছেন পীর হয়েও। আমরা বসে থাকব না। নওশাদ সিদ্দিকির পিঠের চামড়া তুলে নেব আজ”।
এই গোটা ঘটনার ছবি তুলছিলেন এক সংবাদমাধ্যমের চিত্র সাংবাদিক। আচমকাই তাঁকে ঘিরে ধরে মুখে কাপড় বাঁধা এক দল যুবক। প্রত্যেকের কাছেই লাঠি, বাঁশ, হাঁসুয়া। সেই চিত্র সাংবাদিককে হাঁসুয়া দিয়ে কোপ মারার চেষ্টা করেন এই কালো টি-শার্ট পরিহিত এক ব্যক্তি। এলাকায় তখনও কোনও পুলিশকর্মী ছিলেন না বলে জানা গিয়েছে। ক্যামেরায় যে ছবি ধরা পড়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, দলে দলে লাঠি, অস্ত্র হাতে দুষ্কৃতীরা। তাদের কারোর মাথায় হেলমেট, হাতে হাঁসুয়া, লাঠি।
সবমিলিয়ে ভাঙড় এখন অগ্নিগর্ভ। যদিও আবার তৃণমূল নেতার দাবী, মনোনয়ন নাকি শান্তিপূর্ণভাবেই চলছে। এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ শাসক দলকে কটাক্ষ করে বলেন, “তৃণমূল উন্মাদ হয়ে গিয়েছে। তাই নেতারা গাড়িতে বোমা নিয়ে ঘুরছেন, বুঝতে পারছেন না যে বোমা ফাটলে নিজেও মরতে পারেন”।