দুর্নীতিতে তথ্য আড়াল করার চেষ্টা, সিবিআইয়ের তল্লাশির মাঝেই মোবাইল পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন তৃণমূল বিধায়ক

নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই। এই তল্লাশির মাঝেই মোবাইল পুকিউরে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। কেন ওই ফোন ফেলে দেওয়া হল? কোনও তথ্য গোপনের কারণে? কী এমন তথ্য রয়েছে ওই মোবাইলে? এমন নানান প্রশ্ন উঠছে তদন্তকারীদের মনে। ওই মোবাইল আপাতত সন্ধান করছেন তদন্তকারীরা।
গতকাল থেকে তল্লাশি শুরু হয়েছে। আজও সেই তাল্লাশি চলছে। টানা কুড়ি ঘন্টার উপর একটানা সিবিআই তল্লাশিতে স্বাভাবিকভাবেই মুর্শিদাবাদের বড়ঞা ব্লকের আন্দি এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। রাত থেকেই বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়ির পিছন দিকের পুকুরে পাম্পের সাহায্যে জল ছেঁচে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। ছুঁড়ে ফেলা দেওয়া মোবাইলের খোঁজে তদন্তকারীরা। পেনড্রাইভ, ল্যাপটপ, কম্পিউটারের খোঁজও চলছে। বর্তমানে বিধায়কের বাড়ি, পুকুর, গোডাউনে তল্লাশি চালাচ্ছেন ১১ জন সিবিআই আধিকারিক।
প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে অভিযান চালায় সিবিআই। গতকাল, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ সিবিআইয়ের দুটি গাড়ি গিয়ে পৌঁছয় বিধায়কের বাড়ির সামনে। ছিল আধাসেনাও। জানা গিয়েছে, বিধায়কের বাড়িতে ঢুকে তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা বলেন সিবিআই আধিকারিকরা। চার আধিকারিক মিলে প্রশ্ন করছেন বিধায়ককে, এমনটাই জানা গিয়েছে। বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন সিআরপিএফ জওয়ানরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শিক্ষা দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত কৌশিক ঘোষ নামে এক এজেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে বিধায়কের। কৌশিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে বড়ঞার বিধায়কের নাম পেয়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা, এমনটাই অনুমান করা হচ্ছে। কৌশিক হয়ত এমন কিছু তথ্য দিয়েছেন, যাতে সিবিআই আধিকারিকদের মনে হয়েছে যে তৃণমূল বিধায়ককে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত। জানা গিয়েছে, তাঁর রাজনৈতিক প্রচারে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কৌশিকের বড়সড় ভূমিকা ছিল। নানান ফ্লেক্স, ব্যানারে তাঁর নাম থাকত বলে খবর।
তল্লাশি চালিয়ে বিধায়কের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি ও প্রাথমিক শিক্ষক এবং এসএসসির গ্রুপ ডি-র চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা। কতজন প্রার্থীর কাছ থেকে কত টাকা করে তোলা হয়েছে ও সেই টাকা কোন কোন প্রভাবশালীর কাছে গিয়েছে, সেই সম্পর্কে বহু তথ্য বিধায়কের কম্পিউটার ও পেনড্রাইভে থাকার সম্ভাবনা। এই তথ্যগুলি জানতে বিধায়ককে জেরা করা শুরু হয়। যদিও সিবিআইয়ের দাবী, বিধায়ক তদন্তে সহযোগিতা করছেন না।