লোকাল ট্রেন চালালেন স্টেশন মাস্টার ও ট্র্যাফিক ইনস্পেক্টররা, যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে উঠল প্রশ্ন, তুমুল হইচই হাওড়া ডিভিশনে

কোনও গার্ড নয়, হাওড়া ডিভিশনে লোকাল ট্রেন চালালেন স্টেশন মাস্তার ও ট্র্যাফিক ইনস্পেক্টররা। রবিবার এমন ঘটনার কথা সামনে আসতেই নানান বিতর্ক শুরু হয়েছে। যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে উঠেছে অরশ্ন। ডিভিশন অপারেশন বিভাগের এই নির্দেশের জেরে বেশ চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কোনও রোড লার্নিং না থাকা সত্ত্বেও এই সিদ্ধান্ত কীভাবে নেওয়া হল, তা নিয়ে হাওড়ার গার্ডরা প্রশ্ন তুলেছেন।
অল ইন্ডিয়া গার্ড কাউন্সিলের হাওড়ার সাধারণ সম্পাদক প্রবীর সাহা বলেন, “ট্রেনের কোন সুইচের কী কাজ, ট্রেনে আগুন লাগলে কী কর্তব্য, যাত্রী নামা-ওঠা থেকে সিগন্যাল অবজ্ঞা করলে, দুর্ঘটনা ঘটলে গার্ডের যে গুরু দায়িত্ব সে সম্পর্কে ট্রাফিক ইনস্পেক্টরদের কোনও ধ্যান-ধারণা নেই। হাজার হাজার যাত্রীদের বিপদের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছে রেল”।
অভিযোগ, গতকাল, রবিবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটের হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লোকাল, ১০ টা ৩৫-এর গোঘাট লোকাল, ১১ টা ৪২-এর পাণ্ডুয়া লোকাল-সহ অসংখ্য ট্রেনে গার্ডের বদলে ট্রাফিক ইনস্পেক্টরদের দিয়ে চালানো হয়েছে। পূর্ব রেলের প্রিন্সিপ্যাল চিফ অপারেশন ম্যানেজার প্রভাস দানসানা জানান যে তিনি হাওড়ার এই বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।
অপারেশন বিভাগের এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানা গিয়েছে যে গত শুক্রবার সংশ্লিষ্ট বিভাগের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয় যে গার্ডদের একটানা ১০ ঘণ্টা ১৫ মিনিট কাজ করতে হবে। তবে হাওড়ার গার্ডদের অভিযোগ, রেলের নির্ধারিত ‘আওয়ার অফ এমপ্লয়মেন্ট রেগুলেশন’ আইন উপেক্ষা করে হাওড়া ডিভিশনের তরফে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গার্ডদের কথায়, আইন অনুযায়ী, সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার বেশি কাজ করানো যাবে না গার্ডদের দিয়ে। কাজের শেষে ১৬ ঘণ্টা বিশ্রাম। তাদের অভিযোগ, গার্ডদের যেহেতু নির্ধারিত দিনে সাপ্তাহিক ছুটি নেই তাই ট্রেন চালানোর উপর নির্ভর করে তাদের ছুটি ও বিশ্রাম ঠিক হয়। কিন্তু নতুন ডিউটি রোস্টারে সেসবের কোনও তোয়াক্কা করা হয়নি বলেই অভিযোগ।
গতকাল, রবিবার থেকে নতুন নির্দেশিকা চালুর পর গার্ডরা তা মানেননি। পুরোনো নিয়মেই এদিন কাজ করেন তারা। অন্যদিকে, রেলের তরফে গার্ডদের এই প্রতিবাদকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।। হাওড়ার গার্ডদের ছাড়া ট্রাফিক ইন্সপেক্টর দিয়েই একাধিক ট্রেন চালানো হয়।
এই বিষয়ে পূর্ব রেলের প্রিন্সিপ্যাল চিফ অপারেশন ম্যানেজার প্রভাস দানসানা জানান, এখন অনেক কিছু কার্যকর হচ্ছে। বিশ্রামের ন্যূনতম সময় যা দেওয়া সম্ভব তা দেওয়ার পর কর্মীদের কাজ করানো হবে। ব্যয় কমিয়ে আয় বাড়ানোর কারণেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে।