রাজ্য

ওহ্ বাবা! স্ট্রোকের পেশেন্ট দেখব মরে গেলে আবার ঝামেলা, বক্তা পিজি’র চিকিৎসক! মমতার রাজ্যে বেহাল স্বাস্থ্যব্যবস্থা

মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্য সাথীর কার্ডের মতোই বেহাল অবস্থা পশ্চিমবাংলার স্বাস্থ্যব্যবস্থার। বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের আবহে যখন মুখ্যমন্ত্রী জনগণের ভোট পেতে স্বাস্থ্যকেই হাতিয়ার করছেন তখন সেই রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার কঙ্কালসার চেহারাটা এবং চিকিৎসকদের নোংরা মানসিকতা বারবার প্রকাশ পাচ্ছে।

বেসরকারি হাসপাতাল মানেই গলাকাটা টাকা। যেখানে মানুষ বাঁচা-মরার থেকে অর্থই বেশি জরুরি। আর সরকারি হাসপাতাল মানে পরিকাঠামো নেই। বিনা পয়সায় মানুষের চিকিৎসা করাটাকে সরকারি হাসপাতালগুলি দয়ার পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে ফেলেছেন। রাজ্যজুড়ে ছবিটা সর্বত্র এক।

সম্প্রতি কলকাতা শহরে ঘটা একটি ঘটনা  চোখে আঙুল দিয়ে দেখালো কি অবস্থায় রয়েছে একটি রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো যার মাথায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী!

অমৃতা দাশগুপ্ত নামে একজন ভুক্তভোগী ফেসবুকে জানিয়েছেন,  গতকাল তাঁর মা স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। পড়ে যায় শরীরের বাঁ দিকটা। দিশাহীন মেয়ে বাবা কে সঙ্গে নিয়ে মায়ের চিকিৎসা করাতে ছুটে যায় আমরি। কিন্তু ওই যে বললাম বেসরকারি হাসপাতাল মানেই অর্থ আগে চিকিৎসা পরে। অর্থনৈতিক কারণের জন্য বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি পরিবারটির। এরপর আরও ৩-৪ টি হসপিটাল। কিন্তু না কোথাও চিকিৎসা পরিকাঠামো নেই তো কোথাও বেড নেই! ছুটাছুটি শেষে অবশেষে গন্তব্য পিজি। কিন্তু এবার সরকারি হাসপাতাল দেখালো নিজের আসল রূপ।

ওহ্ বাবা! স্ট্রোকের পেশেন্ট দেখব মরে গেলে আবার ঝামেলা, বক্তা পিজি'র চিকিৎসক! মমতার রাজ্যে বেহাল স্বাস্থ্যব্যবস্থা 2

জটিল রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ভর্তি না নিয়ে বাড়ি পাঠালো পিজি। কিন্তু রোগীকে বাড়ি নিয়ে যেতে নারাজ পরিবার। যদি কিছু হয়! এরপর স্ট্রোকে আক্রান্ত মহিলার রাত কাটে ট্রলিতে শুয়ে।

কিন্তু পরের দিনের ছবিটাও এক। রোগীকে দেখার পর চিকিৎসকদের নিজেদের বক্তব্য শুনলে চোখ উপরে উঠতে বাধ্য হবে!

চিকিৎসক বলছেন ‘পেশেন্ট টাকে দেখে আয়, সেন্স আছে নাকি গেলো’, শুনে দ্বিতীয় চিকিৎসকের মন্তব্য, ওহ্ বাবা! স্ট্রোকের পেশেন্ট দেখব মরে গেলে আবার ঝামেলা!

ফ্রি সার্ভিস মানে দয়া করা নয়, বুঝতে হবে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের।

পশ্চিম বাংলার কোটি কোটি জনসংখ্যার রাজ্যে সবার পক্ষে তোমারি টাকা দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়। বুঝতে হবে সরকারি হাসপাতালকে।

প্রশ্ন উঠছে কেন‌ও ২০২১ সালে দাঁড়িয়ে উন্নত নয় সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো? কেন‌ও স্ট্রোকের পেশেন্টকে চিকিৎসা না দিয়ে ফেরাচ্ছে রাজ্যের অন্যতম সরকারি হাসপাতাল? কেন‌ও এখন‌ও বেডের অভাবে ফিরতে হয় রোগীকে? কেন‌ও ন্যূনতম মানবিকতা দেখিয়ে উঠতে পারছে না রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলি? অজস্র প্রশ্ন! উত্তর কি দিতে পারবেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী? 

Back to top button
%d bloggers like this: