ইচ্ছে থাকলেও যোগ দেওয়া হয়নি সেনাবাহিনীতে, সংসারের বোঝা কাঁধে নিয়ে এনসিসি ক্যাডার এখন ‘মিস্টার ফুচকাওয়ালা’

ক্যারাটেতে তিনি ব্রাউন বেল্ট। দিল্লির প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডেও অংশগ্রহণ করেছিলেন একসময়। সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা ছিল প্রবল। কিন্তু ওই সংসার নামক বস্তুটির যাঁতাকলে ফেঁসে গেলেন বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের রাজদীপ।
ইচ্ছে থাকলেও আর সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া হল না। পরিবারের হাল ধরতে হবে। সেই কারণে দরকার চটজলদি কিছু আয়ের উপায়। আর তা করতে গিয়েই এখন তিনি হয়ে উঠেছে ‘মিস্টার ফুচকাওয়ালা’। হ্যাঁ, এলাকাতে রাজদীপকে এই নামেই চেনেন বাসিন্দারা।
ভালোই চলছিল রাজদীপের জীবন। এনসিসি-র ক্যাডার ছিলেন তিনি। কিন্তু করোনা এসে যেন গোটা জীবনটা উলটপালট করে দিল তাঁর। সেই সময় পরিবারে অর্থের সমস্যা দেখা দেয়। সেই কারণে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্নকে পিছনে ফেলে অন্য পেশায় নিজেকে নিয়োগ করেন রাজদীপ।
হ্যাঁ, কষ্ট তো অবশ্যই হয়েছিল। তিলতিল করে গড়ে তোলা নিজের স্বপ্নকে নিজের হাতের গলা টিপে শেষ করেছিলেন রাজদীপ। কিন্তু উপায় আর কী! পরিবারের দায়িত্ব যে কোনওভাবেই এড়ানো যায় না। সেই কারণেই ফুচকা বিক্রিকেই নিজের পেশা করে নেন তিনি। পাড়ার এক বন্ধুর সঙ্গেই যৌথভাবে এই ব্যবসা শুরু করেন রাজদীপ।
তাঁর সেই চিকেন, চকলেট, আইসক্রিম ফ্লেভারের ফুচকা মনে ধরে যায় সকলের। অল্প দিনের মধ্যেই ব্যবসা বেশ জনপ্রিয়তা পায়। সন্ধে হলেই ফুচকাপ্রেমীদের ঢল নামে এখন রাজদীপের স্টলের সামনে। তাঁকে এখন সকলে ‘মিস্টার ফুচকাওয়ালা’ নামেই চেনেন। তবে দেশের জন্য কিছু করতে না পারার আক্ষেপ আজও কুড়ে কুড়ে খায় রাজদীপকে। তাঁর সেই ক্ষতের প্রলেপ হল তাঁর পরিবারের হাসিমুখ।