দুর্নীতি যেন সর্বত্র! শিক্ষাক্ষেত্রের পর এবার স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ, তদন্ত কমিশন গঠন করল কলকাতা হাইকোর্ট

প্রথমে শিক্ষাক্ষেত্র, এরপর পুলিশ, দমকল। আর এবার স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও উঠল নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ। মামলা দায়ের করা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। এর আগে গ্রুপ ডি মামলায় বিচারপতি হরিধ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গড়ে দেয়।
আর এবার স্বাস্থ্যক্ষেত্রে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট পদে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করতে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি শম্পা দত্ত পালের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জয়ন্তকুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন দেওয়া হল। সেই কমিটিই এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত চালাবে।
জানা গিয়েছে, এই তদন্ত কমিটিতে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জয়ন্তকুমার বিশ্বাস ছাড়াও ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের সচিব নরেন্দ্রনাথ দত্ত ও কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী অয়ন বন্দোপাধ্যায়ও থাকবেন। এই তিন সদস্যের কমিটি গঠনের পাশাপাশি আদালত এও নির্দেশ দেয় যে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট আদালতে পেশ করতে হবে। আদালত জানায়, এই মামলার ফলাফলের উপর চাকরিরত ব্যক্তিদের ভাগ্য নির্ভর করবে।
ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, “এই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বজনপোষণ, পক্ষপাতিত্ব এবং এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের জ্বলন্ত উদাহরণ। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কিছু কিছু ব্যক্তিদের বেছে বেছে নিয়োগ করা হয়েছে। তারা ব্লু-আইড হিসাবে পরিগণিত হয়েছে”। এছাড়াও আদালতের মতে, “সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে কোনভাবেই কোন ব্যক্তির অসংবিধানিক আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। তাই সত্য খুঁজে বার করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়”।
আদালত সূত্রের খবর অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের তরফে স্বাস্থ্য দফতরের অধীনে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টের ৭২৫টি শূন্যপদে নিয়োগের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী, এর পরের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে নথি যাচাই ও ইন্টারভিউ হয়।
তবে মামলাকারীর দাবী, তিনি এমএসসি পাশ করেছেন। কিন্তু তিনি মেডিক্যাল টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা করেছেন, এই যুক্তি দেখিয়ে তাঁকে ১২ নম্বর দেওয়া হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, অন্যদিকে কিছু প্রার্থী যারা বিএসসি পাশ করেছেন, কিন্তু তাদের ল্যাব টেকনোলোজির যোগ্যতা দেখিয়ে তাদের দেওয়া হয়েছে ১৫ নম্বর।
মামলাকারীর দাবী, সেই প্রার্থীদের নিয়োগও করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই তিনি স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল-এর দ্বারস্থ হন ও অভিযোগ জানান। কিন্তু চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মামলাকারী।