‘আমি নিরপরাধ, আমি নিরপরাধ, আমি নিরপরাধ’, কোর্ট লকআপ থেকে বেরোনোর সময় জোর গলায় দাবী সৌরভের, ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত সৌরভের

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত সৌরভ চৌধুরীকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল আদালত। আজ, শনিবার আদালতে তোলা হয় তাকে। তার জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায় এদিন। ইতিমধ্যেই সৌরভের ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এদিন কোর্ট লকআপ থেকে বেরোনোর সময় সৌরভ জোর গলায় দাবী করেন, “আমি নিরপরাধ, আমি নিরপরাধ, আমি নিরপরাধ”।
গত বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলের সামনে উদ্ধার হয় স্বপ্নদীপের রক্তাক্ত দেহ। হোস্টেলের তিনতলা থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়, তা পরিষ্কার। কিন্তু কীভাবে তিনি পড়ে গেলেন, তা নিয়ে দানা বাঁধে রহস্য। একদিকে যখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবী করে যে স্বপ্নদীপ আ’ত্ম’হ’ত্যা করেছে, সেই সময় তাঁর পরিবার ও সহপাঠীদের দাবী, স্বপ্নদীপ র্যাগিংয়ের শিকার।
সৌরভের বিরুদ্ধে দায়ের হয় মামলা
স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনায় খু’নের মামলা রুজু করেন তাঁর বাবা। অভিযোগের পরই গতকাল, শুক্রবার পুলিশ সৌরভ চৌধুরীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় একাধিক অসংগতি মিলছিল। সেই কারণে জেরে রাতের দিকে গ্রেফতার করা হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীকে। রাতভর জেরা করা হয় তাকে। শনিবার আলিপুর আদালতে পেশ করা হয় তাকে। আগামী ২২ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
কী বলছেন সৌরভের আইনজীবী?
সৌরভ চৌধুরীর আইনজীবীর কথায়, স্বপ্নদীপের বাবা কোনওদিনই যাদবপুর আসেননি। স্বপ্নদীপ ৩ তারিখ ভর্তি হন। ৬ তারিখ যাদবপুরে ক্লাস করতে আসেন। যাদবপুর মেন হস্টেলে ঘর পাওয়ার ক্ষেত্রে সৌরভ চৌধুরী ও মনোতোষ মণ্ডল সহযোগিতা করেছিলেন স্বপ্নদীপকে। ওই ঘরে বিমান বলে একটি ছেলে থাকতেন। সৌরভ মৃত ছাত্রের ক্লাসমেটও ছিলেন না, রুমমেটও না। ১০ তারিখ যে ফোন থেকে স্বপ্নদীপ ফোন করেন সেটাও সৌরভের ফোন নয়। বাবার মনে হয়েছিল ছেলে হতাশাগ্রস্ত। এমনকী পড়ে যাওয়ার পরও যে ফোন বাড়িতে যায়, তাও সৌরভের ফোন নয়। সৌরভকে ফাঁসানো হচ্ছে।
অন্যদিকে সরকারি পক্ষের আইনজীবী সৌরিন ঘোষাল বলেন, “বাবা আগে আসেনি সত্যি। তিনজন পড়ুয়ার বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। সুপারেরও বয়ান রেকর্ড হয়েছে। বলা হচ্ছে ধাক্কা মেরে ফেলেছে। কারা কারা আছে? ঘটনার পুনঃনির্মাণ করতে হবে। এই ঘটনার মোটিভ জানতে হবে। অভিযুক্তকে সত্যি কথা বলানোর জন্য সময় লাগবে। যে ফোন বাজেয়াপ্ত হয়েছে তার কল লিস্ট বের করব আমরা”।
এদিন আদালতে তদন্তকারী আধিকারিক জানান যে মৃত্যুর আগে স্বপ্নদীপের উপর অত্যাচার করা হয়েছিল। এরপরই বিচারক তাকে ১০ দিন অর্থাৎ ২২শে আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।