দেশ

বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে আরও পিছিয়ে গেল ভারত, এগিয়ে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল

একে অতিমারির ধাক্কা, আর তার উপর খিদের জ্বালায় জ্বলছে ভারতের প্রান্তিক মানুষের একাংশ। বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে এবার আরও পিছিয়ে গেল ভারত। এতটাই পিছিয়ে যে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপালের মতো দেশগুলি পিছনে ফেলে দিল ভারতকে।

২০২১ সালে বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের ১০১ নম্বর স্থানে ছিল ভারত। তা থেকে নেমে এবার পৌঁছে গিয়েছে ১০৭-এ। ক্ষুধা সূচকের রিপোর্টে বলা হচ্ছে, ভারতের জনসংখ্যার ১৬.৩ শতাংশ মানুষ ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে ভুগছে। ১৯.৩ শতাংশ শিশুর উচ্চতার অনুপাতে ওজন খুবই কম। আর ৩৫.৫ শতাংশ শিশুর অপুষ্টি এতটাই যে বয়সের তুলনায় উচ্চতায় বাড়েনি।

ক্ষুধা নিবৃত্তির নিরিখে সেই তালিকায় শীর্ষ ১৭টি স্থান দখল করে থাকল চিন, তুরস্ক, কুয়েতের মতো দেশ। গোটা বিশ্বের ক্ষুধা সূচক নির্ধারণ করে দুটি সংস্থা মিলে। একটি আইরিশ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, যার নাম কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড। অন্য সংস্থাটি জার্মানের। তাদের নাম ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে। ক্ষুধা ও দেশের মানুষের অপুষ্টির নিরিখে তারা এই সূচক স্থির করে।

২০১৪ সালে যখন নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসেন, সেই সময় তিনি ‘আচ্ছে দিন’-এর স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন দেশবাসীকে। এবার বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারতের আরও পতনের পর এই ইস্যু নিয়ে কটাক্ষ করেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তাঁর কথায়, গত ৮ বছরে মোদীর জমানায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।

গত বছর ১১৬টি দেশকে নিয়ে হয়েছিল বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের সমীক্ষা। সেই সমীক্ষায় ভারতের স্থান ছিল ১০১ নম্বরে। এই বছর সমীক্ষা হয়েছে ১২১টি দেশকে নিয়ে। এবার ভারতের স্থান ১০৭ নম্বরে।

তবে ক্ষুধা সূচকে যে হারে ভারতের পতন ঘটছিল তা কিছুটা হলেও কমেছে। ২০০০ সালে সেই পতনের হার ছিল ৩৮.৮ শতাংশ। সামগ্রিক ভাবে মোদীর জমানায় ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারতের পতন ২৮.১ থেকে ২৯.১ হারে ঘটেছে।

প্রসঙ্গত, বিশ্ব ক্ষুধা সূচক তথা চারটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়। এক, অপুষ্টি। দুই, দেশে পাঁচ বছরের নীচে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা কত? অর্থাৎ উচ্চতার অনুপাতে যাদের ওজন অনেকটাই কম। তিন, পাঁচ বছরের কত শিশুর উচ্চতা তাঁদের বয়সের অনুপাতে অনেক কম। ক্রনিক অপুষ্টিতে ভোগার জন্য কত জনের ক্ষেত্রে এমন হচ্ছে? এবং চার, পাঁচ বছরের নিচে কত জন শিশু মারা যাচ্ছে?

বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের পরামর্শদাতা মিরিয়াম উইমার্স বলেছেন, “কোন দেশে কী পরিমাণ অপুষ্টিতে কত মানুষ ভুগছে তাই দেখা হয়েছে। তার ভিত্তিতে ফুড ব্যালেন্স শিট তৈরি করা হয়েছে। ভারত সহ বিভিন্ন দেশ সরকারি ভাবে রাষ্ট্রপুঞ্জকে যে পরিসংখ্যান সরকারি ভাবে দিয়েছে তাই এখানে ব্যবহার করা হয়েছে”।

Back to top button
%d bloggers like this: