দেশ

স্বস্তি কেন্দ্র সরকারের! নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত আইনত বৈধ, নরেন্দ্র মোদীর পক্ষেই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট

২০১৬ সালের ৮ই নভেম্বর ঠিক রাত ৮টার সময় এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আচমকাই ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের ঘোষণা করেন তিনি। সেই সিদ্ধান্ত আদৌ কতটা বৈধ, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন ওঠে। এই নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয় সুপ্রিম কোর্টে। আজ, সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বেঞ্চ জানিয়ে দিল যে নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত আসলে বৈধ। এদিন নোটবন্দি নিয়ে যা যা মামলা ছিল, তা খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত।

কেন্দ্রের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছিল। প্রশ্ন তোলা হয়েছিল যে এই সিদ্ধান্ত কী শুধু মোদীর নাকি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে আলোচনার পর এই ঘোষণা হয়েছিল? এই নিয়ে সংসদীয় প্রক্রিয়া কী ছিল? নোট বাতিলের ফলে কী কী লাভ হয়েছে দেশের? এমন প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টে মোট ৫৮টি মামলা দায়ের হয়।

বিচাপতি আবদুল নাজিরের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে গত কয়েক মাস ধরে এই মামলার শুনানি চলছিল। আজ, সোমবার সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়ে জানায় যে কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক কোনও সিদ্ধান্তকে পাল্টানো যায় না। এমনকী কীভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা বিবেচনা করেও কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত বদলানো যায় না। এছাড়াও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে আলোচনা করার পরই কেন্দ্র নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানান বিচারপতিরা।

বিচারপতি আবদুল নাজির, বিচারপতি বিআর গাভাই, বিচারপতি এএস বোপান্না, বিচারপতি বিভি নাগারত্ব ও বিচারপতি ভি সুব্রহ্মণ্যমের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলছিল। আসলে, আগামী ৩রা জানুয়ারি অবসর নেবেন বিচারপতি আবদুল নাজির। এর আগে আজ, ২রা জানুয়ারি এই মামলার শুনানি হবে। আর আজ, সোমবারের সুপ্রিম কোর্টের রায় নরেন্দ্র মোদীর পক্ষেই গেল। বিচারপতিদের বেঞ্চ এদিন জানায় যে ১০০০ ও ৫০০ টাকার নোট বাতিলের জন্য কেন্দ্র ৫২ দিন সময় দিয়েছিল আর যা যথেষ্ট সময়।

নোট বাতিলের মামলার রায় মোদীর পক্ষে গেলেও এই নিয়ে ভিন্ন মত বিচারপতি বিভি নাগারত্বের। তাঁর কথায়, নোটবন্দির মতো সিদ্ধান্ত সরকার ঘোষণা করেছে কিন্তু তা সংসদের মাধ্যমে আসা উচিত ছিল।

বলে রাখি, ২০১৬ সালে হঠাৎই ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের কথা ঘোষণা করা হয় কেন্দ্র সরকারের তরফে। সরকারের দাবী ছিল, সন্ত্রাসবাদে আর্থিক মদত, কালো টাকা এবং কর ফাঁকি রুখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশ জুড়ে সাধারণ মানুষ সমস্যার সম্মুখীন হন। এটিএমের লাইনে দাঁড়ানো অবস্থায় অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়। একপক্ষের দাবী ছিল যে হটকারী সিদ্ধান্তে দেশের কোনও লাভ হয়নি। সেই সূত্রেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। গত সেপ্টেম্বরে এই সংক্রান্ত শুনানিতে আদালত রাজি হয়।

Back to top button
%d