প্রথম পক্ষের সন্তানকে মানবেন না প্রেমিক, নতুন সংসার গড়তে নিজের ছেলেকে রেলব্রিজ থেকে মালগাড়িতে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন মা

নতুন সংসার পাতার জন্য ছেলেকে নিয়েই ঘর ছেড়েছিলেন মহিলা। কিন্তু সেই ছেলেকে মেনে নিতে চান নি প্রেমিক। সেই কারণে ছেলেকে রেলব্রিজ থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন মা। কিছুক্ষণ পর সম্বিত ফিরে পেতেই ছেলেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু লাভ হয়নি। ডানকুনি-আন্দুলের মাঝে ভট্টনগরের স্টেশনের কাছে মালগাড়ি থেকে নাবালকের দেহ উদ্ধার হয়।
কী ঘটেছে গোটা ঘটনাটি?
জানা গিয়েছে, নদিয়ার চাপরা থানার আড়ং সরিষার বাসিন্দা আসামনি বিবি। অভিযোগ, পরকীয়ায় জড়িয়েছিলেন তিনি। তাই আট বছরের সন্তানকে নিয়ে প্রেমিক হেদয়াতুল্লার সঙ্গে ঝাড়খণ্ড পালিয়ে যান দিন দশেক আগে। কিন্তু প্রেমিকার প্রথম পক্ষের সন্তানকে মেনে নিতে পারছিলেন না হেদায়াতুল্লা। এনিয়ে বাড়ছিল অশান্তি। শেষমেষ শনিবার রাতে দু’জন বর্ধমানের অদূরে তালিত স্টেশনে হাজির হয়।
অভিযোগ, এদিন রাত সাড়ে দশটা নাগাদ ওভারব্রিজ থেকে আট বছরের সন্তানকে চলন্ত মালগাড়ির ভিতর ছুঁড়ে দেন মহিলা। পরে অবশ্য ছেলেকে বাঁচাতে মালগাড়ির গার্ডের কামরায় চড়ার চেষ্টা করেন আসামনি। তবে তাঁকে মালগাড়িতে চড়তে দেন নি গার্ড।
এরপর রাত দেড়টা নাগাদ বর্ধমানে এসে আরপিএফকে সব বলেন মহিলা। গভীর রাতে মালগাড়িটি ভট্টনগরের কাছে পৌঁছলে আরপিএফ পিছনের দিকে আট নম্বর ওয়াগনের ভিতর থেকে শিশুটিকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে।
ইতিমধ্যে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। খবর পেয়ে রবিবার হাওড়ায় আসেন ওই কিশোরের মামা রফিকুল শেখ। এই ঘটনায় বোন এবং তাঁর সঙ্গে মেলামেশা করা এক ব্যক্তিকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন ওই ব্যক্তি।
কী জানান মহিলার দাদা?
রফিকুল জানান, বোন কোথায় থাকছিলেন তা জানেন না। শুধু বলেন, শনিবার রাতে বোন ছেলেকে নিয়ে হেদয়াতুল্লার সঙ্গে দেখা করতে যান। অভিযোগ, এরপরই বোনকে মারধরের পাশাপাশি গয়নাগাটিও কেড়ে নেন। রফিকুল বলেন, “বোনের থেকে জানতে পারি অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল ওকে। খানা জংশনের কাছে নামায়। ওখান থেকেই সমস্যা শুরু। এরপরই অশান্তি, মারধর করে হেদায়তুল্লা শেখ। ভাগ্নেকে মারে। তারপর ব্রিজের উপর থেকে রেলের খালি বগিতে ফেলে দেয়। আমার বোনকেও ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কোনওভাবে পালিয়ে আসে”।