রাজ্য

‘বিচারব্যবস্থার একাংশকে কাজে লাগিয়েছে বিজেপি, ২৪ মাসে ২৬টা সিবিআই তদন্তের নির্দেশ’, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে মামলা সরায় খুব খুশি অভিষেক

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে আর কোনও রায় দিতে পারবেন না কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর এজলাস থেকে নিয়োগ দুর্নীতির মামলা সরানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এই সংক্রান্ত মামলার জন্য অন্য বিচারপতি নিয়োগ করতে হবে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে। শীর্ষ আদালতের এই রায়ে বেজায় খুশি তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

বর্তমানে উত্তরবঙ্গে সংযোগ যাত্রা সারছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে তিনি বলেন, “দেশের সর্বোচ্চ আদালতের উপর ভরসা বরাবরই ছিল, আছে। আমরা আগেও বলেছি, পশ্চিমবঙ্গ এমন একটা রাজ্য যেখানে নির্বাচনে ধাক্কা খেয়ে বিজেপি বিচারব্যবস্থার একাংশকে কাজে লাগাচ্ছে বাংলার বিরুদ্ধে। গত ২৪ মাসে পশ্চিমবঙ্গের নানা বিষয়ে ২৬ ইডি কিংবা সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের তরফে। আর তা চ্যালেঞ্জ করে আমরা যখনই গিয়েছি সুপ্রিম কোর্টে, তখন শীর্ষ আদালত তার বেশিরভাগই খারিজ করে দিয়েছে”।

অভিষেকের আরও বক্তব্য, “এই বিষয়টি বিচারাধীন, বেশি কথা বলব না। তবে তৃণমূলের যদি কেউ এই কেলেঙ্কারিতে যুক্তে রয়েছে বলে প্রমাণ মেলে, তাহলে দলই সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে বদ্ধপরিকর। একমাত্র তৃণমূলই গোটা দেশের মধ্যে এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে”।

প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কিছুদিন আগে নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল ঘোষের অভিযোগের চিঠির প্রেক্ষিতে তিনি বলেছিলেন প্রয়োজনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে ইডি-সিবিআই। সেই প্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিষেক। তাঁর আইনজীবী মনু সিংভি প্রশ্ন তুলেছিলেন যে কোনও বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কোনও বিচারপতি সাক্ষাৎকার কীভাবে দিতে পারেন?

এই মামলার গত শুনানিতে  সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের পর্যবেক্ষণ ছিল, যদি কোনও বিচারাধীন মামলা নিয়ে যদি কোনও বিচারপতি সাক্ষাৎকার দিয়ে থাকেন, তাহলে সেই মামলার শুনানির অধিকার হারিয়েছেন তিনি। কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের থেকে এই বিষয়ে হলফনামা তলব করে সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার সেই মামলা ওঠে সুপ্রিম কোর্টে। এই মামলার শুনানিতেই এই রায় দিল শীর্ষ আদালত।

বিজেপি সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে ব্যাখ্যা করেছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এই রায় অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। উনি যেভাবে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের হয়ে যেভাবে ক্রুসেডে নেমেছিলেন, তাঁর সেই লড়াই সারাজীবন মনে রাখবে বাংলার মানুষ। তবে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে আমরা মাথা পেতে নিতে বাধ্য”।

Back to top button
%d bloggers like this: