রাজ্য

দত্তপুকুরে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবী বিজেপির, ‘শকুনের রাজনীতি শুরু করেছে’, কটাক্ষ কুণালের

রবিবার সকালে বারাসাতের দত্তপুকুরে বেআইনি বাজি কারখানায় ঘটে বিস্ফোরণ। এই বিস্ফোরণের জেরে মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। গুরুতর জখম ৭-৮ জন। বিস্ফোরণের তীব্রতার জেরে আশেপাশের অনেক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ-প্রশাসনের গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবার শাসক দল তৃণমূলকে একহাত নিল বিরোধীরা। এই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবী জানাল বিজেপি।

স্থানীয়দের দাবী, পুলিশের মদতেই এলাকায় এই বেআইনি বাজি কারখানা চলত। শাসক দলের কিছু নেতানেত্রীদের নামও নিয়েছেন তারা। তাদের দাবী, শাসক দলের কিছু স্থানীয় নেতা কারখানার মালিকের থেকে হপ্তা তুলতেন। এই নিয়ে এবার মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ শানালেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

কী বলেন শুভেন্দু?

বিরোধী দলনেতার কথায়, “এগরার ঘটনার পর হেলিকপ্টারে চড়ে ১৫দিন পরে এসে অনেক বক্তব্য রেখেছিলেন। ভানু বাগের শ্রাদ্ধ-শান্তিতে এসেছিলেন। মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে কমিটি হয়েছে, ডিএমরা জায়গা দেখছে, এসওপি তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এসব পাবলিসিটি ছাড়া আর কিছুই নয়। মুখ্যমন্ত্রীর এসব দিকে নজর নেই। তাঁর নজর কীভাবে চোরদের বাঁচানো যায়। খেলা, মেলাতে যথেচ্ছ অর্থ ব্যয় করে মানুষকে সাময়িকভাবে ভুলিয়ে রাখার কাজেই তিনি ব্যস্ত”।

বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কথায়, “এটা কোনও সাধারণ বাজি কারখানার বিস্ফোরণ নয়। সমস্ত জেলায় এধরনের অবৈধ বাজি কারখানা তৈরি হয়েছে। স্টোনচিপ দিয়ে কোন শব্দবাজি বানানো হচ্ছিল! ওখানে লুকিয়ে লুকিয়ে বোমা বাঁধার কাজ হয়েছে। সেগুলোই ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। তা পঞ্চায়েত ভোটের সময়েই বোঝা গিয়েছে। এগরার ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী অবৈধ বাজি কারখানা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাও কেন একের পর এক বেআইনি কারখানার হদিস মিলছে বিস্ফোরণের পর? এর দায় মুখ্যমন্ত্রীকে নিতে হবে”।

এই ঘটনায় সরব হয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিও। তিনি বলেন, “কোন রাসায়নিক ব্যবহার হতো যে এমন ভয়াবহ বিস্ফোরণ হল বাজি কারখানার ভিতরে? আশেপাশের বাড়িগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হল। আমাদের দলের এক বুথকর্মীর মা’ও এই ঘটনায় মারা গিয়েছেন। আরও অনেকের মৃত্যু হয়েছে বিস্ফোরণের জেরে। যারা এই ঘটনায় মূল দোষী তারা পলাতক। ওদের ধরতে পারলেই আসল সত্য সামনে আসবে। আজকাল এরকম ঘটনা ঘটলেই দোষীদের গা ঢাকা দিতে সাহায্য করে প্রশাসন আর দোষ চাপায় বিরোধীদের ঘাড়ে”।

কী প্রতিক্রিয়া তৃণমূলের?

এই বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় এখনই কাউকে দোষারোপ করতে চাইছেন না তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “যে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কেন এমন হল, তা পুলিশ-প্রশাসন তদন্ত করে দেখছে। তার আগেই চারপাশ থেকে দোষ চাপানোর পালা শুরু হয়ে গিয়েছে। বিরোধীরা শকুনের রাজনীতি শুরু করেছেন। চিল চিৎকার জুড়েছেন রাজ্য সরকারের দোষ, প্রশাসনের গাফিলতি বলে। আগে তদন্ত হোক, তারপর সত্যি সামনে আসবে। যেভাবে বাজি শিল্পকে নিয়ে কাটাছেঁড়া করা হচ্ছে, তা একেবারেই ঠিক নয়”।

Back to top button
%d bloggers like this: