‘গরীব বাচ্চাদের খাবার লুঠ করছে, সবে ১০০ কোটি পাওয়া গেছে, আরও ছাড়াবে দুর্নীতির পরিমাণ’, মিড ডে মিলে দুর্নীতি প্রসঙ্গে দিলীপ

নানান দুর্নীতির জেরে বিদ্ধ রাজ্য সরকার (state government)। এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মিড ডে মিলে দুর্নীতিও (Mid Day Meal scam)। তা নিয়ে এই মুহূর্তে রাজ্যে তুমুল চর্চা চলছে। রাজ্যের স্কুলগুলিতে মিড ডে মিল নিয়ে সমস্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিয়েছে কেন্দ্রের জয়েন্ট রিভিউ মিশন। সেখানে রাজ্যের প্রতিনিধিরাও ছিলেন। সেই রিপোর্টেই রাজ্যের বিরুদ্ধে মিড ডে মিলে ১০০ কোটির আর্থিক দুর্নীতি প্রকাশ্যে এসেছে। আর তা নিয়ে এবার কটাক্ষ শানালেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
আজ, বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে চা চক্রে যোগ দেন দিলীপ ঘোষ। সেখান থেকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের সরকার মিড ডে মিলের কোন ডাটা মেনটেইন করেনি । পাশের রাজ্য অসমে দেখুন প্রত্যেকটি স্কুলের লিস্ট আছে, তাঁদের কাছে সমস্ত কিছু হিসাব রয়েছে । কিন্তু পশ্চিম বাংলাতে কোন হিসাব নেই কোন ডাটা নেই। সবে ১০০ কোটি তো পাওয়া গেছে, আরও অনেক খবর হবে”।
কেন্দ্রীয় সরকারের রিভিউ মিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গ সরকার মিড ডে মিলের আসল খরচের অনেক বেশি টাকা বাড়িয়ে দেখিয়েছে। এই রিপরতের দাবী, ১৬ কোটি মিড ডে মিল কম দিয়ে ১০০ কোটি টাকা বেশি খরচ দেখানো হয়েছে রাজ্যের তরফে। মিড ডে মিল প্রকল্পের বিষয়ে খতিয়ে দেখার জন্য কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের তরফে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে একটি একটি জয়েন্ট রিভিউ মিশন গঠন করা হয়েছিল।
সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছর এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসে স্থানীয় প্রশাসন মিড ডে মিল খাতে যা ব্যয় করেছে, তার থেকে অনেকটা বেশি দেখানো হয়েছে হিসাবে। অভিযোগ, ভাত-ডাল এবং সবজি রান্নার ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ কম খরচ করা হয়েছে। ওই প্রকল্পের টাকা অন্যান্য খাতে ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু তাই-ই নয়, মেয়াদ উত্তীর্ণ খাবার ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, “স্কুল নেই, স্কুল আছে তো বাচ্চা নেই, সেখানে মিড ডে মিলের খরচ যাচ্ছে। কতজন স্টুডেন্ট রয়েছেন, তার কোনও হিসাব নেই। সব জায়গাতেই দুর্নীতি। সেটা তদন্ত করে যার রিপোর্ট এসেছে জানা গিয়েছে”।
কেন্দ্রের প্রতিনিধি দলের এই তদন্ত নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু দাবী করেন যে কেন্দ্রের যে দল মিড ডে মিল নিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসেছিল, তাদের রাজ্য সবরকমভাবে সাহায্য করেছে। তাঁর দাবী, “যেহেতু এটির নাম জয়েন্ট রিভিউ মিশন, তাই প্রথম থেকেই কথা হয়ে ছিল, আমাদের প্রকল্প অধিকর্তা সেই রিপোর্ট দেখবেন এবং সই করবেন। কিন্তু সই নেওয়া তো দূরের কথা, আমাদের না জানিয়েই সেটি জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা এতে অবাক হই”।
শিক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্য প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের পাল্টা প্রশ্ন, “শিক্ষামন্ত্রী বলছেন, আমাদের জিজ্ঞাসা করেনি কেন, আমি বলি, যে চোর তাঁকে কী জিজ্ঞাসা করবে? যে চুরি করছে জেনে বুঝে তাকে জিজ্ঞাসা করবে নাকি? তাহলে রিপোর্টটা কী হবে? যেটা ওঁরা বাস্তব দেখেছেন সেটাই দিয়েছেন”। তাঁর কথায়, সবদিক থেকে লুঠ করছে বর্তমান রাজ্য সরকার। গরীব বাচ্চাদের খাবারও লুঠ করছে তারা এমনটাই দাবী করেন দিলীপ ঘোষ।