এসএসসি-র ওয়েটিং লিস্টে ছিল নাম, তৃণমূল নেতাকে মোটা টাকা ঘুষ দিয়েও হয়নি চাকরি, অবসাদে আত্মহত্যা পথ বাছলেন যুবক

বর্তমানে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য উত্তাল। টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ যেমন উঠেছে তেমনই আবার টাকা নিয়ে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার অভিযোগও রয়েছে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। এরই মাঝে এল একটি খবর। এসএসসি-র জেরেই চরম পরিণতি হল এক যুবকের।
ইংরেজিতে মাস্টার্স করেছিলেন তপন দোলই নামের এক যুবক। করেছিলেন বিএড-ও। শিক্ষকতা করার স্বপ্ন নিয়ে বসেছিলেন এসএসসি-তে। ওয়েটিং লিস্টে নামও ছিল। সেই কারণে এক তৃণমূল নেতার দ্বারস্থ হয়েছিলেন চাকরির জন্য। কিন্তু মোটা টাকা ঘুষ নেওয়ার পরও চাকরি দেন নি তৃণমূল নেতা। শেষ পর্যন্ত মানসিক যন্ত্রণা না সহ্য করতে পেরে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার পথ বাছলেন ওই যুবক।
এই ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার সুপার বুরালি গ্রামে। তপনের পরিবারের দাবী, ওয়েটিং লিস্টে নাম ওঠার পর ব্যাঙ্ক থেকে ৫ লক্ষ টাকা লোণ নেন তপন। সেই টাকা বছর চারেক আগে কেশপুরের বিশ্বনাথপুরের এক তৃণমূল এজেন্টকে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাও মেলেনি চাকরি। ধীরে ধীরে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন তপন। চাষবাস করে পাড়ার ছাত্রছাত্রীদের পড়িয়েই দিন কাটছিল তাঁর। মাথার উপর লোণের চাপও ক্রমেই বাড়ছিল।
শেষপর্যন্ত চাকরিলাভের আশা দেখতে না পেয়ে সেই এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করেন তপন। তাঁর কাছে সরাসরি সেই টাকা চেয়ে বসেন। কিন্তু সেই এজেন্ট সেই টাকা নেওয়ার কথা বেমালুম অস্বীকার করে। মাথার উপর ঋণের বোঝা বাড়তে থাকে তপনের। এমন মানসিক চাপ আর নিতে পারেননি তিনি। অবসাদের জেরেই এইরকম এক কঠিন সিদ্ধান্ত নেন তপন।
তপনের দিদি জানান যে তাঁর ভাই যে এমন কাজ করবে, তা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেন নি তিনি। তপনের দাদার কথায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে সকলের সঙ্গেই রাতে খাওয়াদাওয়া করেন তপন। এরপর শুতে যান। কিন্তু এরই ফাঁকে কোনও এক সময় বিষ খেয়ে নেন তপন।
তাঁর দাদা জানান যে সেদিনই মাঝরাত থেকেই খুব শরীর খারাপ হতে থাকে তপনের। পরিবারের লোকজন তাঁকে পাশের হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু শেষরক্ষা আর হয়নি। গতকাল, শনিবার রাতে মৃত্যু হয় তাঁর।