মুখ্যমন্ত্রীই অনুপ্রেরণা! পদবী ‘দাস’ বদলে ‘বন্দ্যোপাধ্যায়’ করে দিলেন নদিয়ার হেডস্যার তথা মমতার একনিষ্ঠ ভক্ত, বললেন, ‘উনি মুনি-ঋষিদের সমতুল্য’

জন্ম থেকেই পদবী দাস। কিন্তু আচমকাই তিনি হয়ে গেলেন ‘বন্দ্যোপাধ্যায়’। নিজের পদবীই বদল করে দিলেন তিনি। গিরীন্দ্রনাথ দাস থেকে হয়ে গেলেন গিরীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একনিষ্ঠ ভক্ত। তাই তাঁর অনুপ্রেরণাতেই দাস থেকে বন্দ্যোপাধ্যায় হয়ে গেলেন নদিয়ার সেই প্রধান শিক্ষক যিনি মমতাকে নিউটনের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।
নদিয়ার হোগলবেরিয়া আদর্শ শিক্ষা নিকেতন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হলেন গিরীন্দ্রনাথ দাস। এর আগে পাঠ্য পুস্তকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছাপিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন তিনি। নিজের দায়িত্বে এভাবে পাঠ্যপুস্তকে মমতার ছবি ছাপানোর জেরে প্রতিবাদ করেছিলেন পড়ুয়ারা। ওই ছাত্রছাত্রীদের মারধরের অভিযোগও ওঠে প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে সেই সময়।
পরবর্তীকালে পড়ুয়াদের অভিভাবকরা এসে বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। এই ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের জবাব ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি গোটা রাজ্য চালাচ্ছেন। পুলিশ থেকে শুরু করে শিক্ষা ব্যবস্থা সবকিছুই চলছে তাঁর অধীনেই। রাজ্যের সাধারণ মানুষ একাধিক প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি পাঠ্যপুস্তকের প্রথম পাতায় কেন থাকবে না, তা নিয়ে প্রশ্নও তোলেন তিনি।
আর এবার তো আরও একধাপ এগিয়ে গেলেন গিরীন্দ্রনাথবাবু। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণাতে এবার নিজের পদবীই বদলে ফেললেন। তাঁর কথায়, মুখ্যমন্ত্রী মুনি-ঋষিদের সমতুল্য। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রীর একনিষ্ঠ ভক্ত হিসেবে তিনি নিজের পদবী বদলে ‘বন্দ্যোপাধ্যায়’ করলেন।
এই নিয়ে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আইজ্যাক নিউটনের থেকেও কম কিছু নয়। বিভিন্ন ঋষি মনীষীর মতো সমান দক্ষ তিনি। কন্যাশ্রী থেকে শুরু করে যুবশ্রী এবং রূপশ্রী সহ মানুষ একাধিক প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। পানীয় জল থেকে শুরু করে চাল সবকিছুই বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতো মুখ্যমন্ত্রী গোটা দেশ কেন পৃথিবীতে একটাও নেই।” তিনি আরও বলেন, “কর্নাটকে বিজেপি পরাজিত হয়েছে। আগামী দিনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। সেই কারণেই আমি তার খুব প্রিয় ভক্ত হয়ে নিজের টাইটেল চেঞ্জ করেছি”।
এই নিয়ে বিরোধীরা প্রধান শিক্ষককে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। তাঁকে সরাসরি ‘তৃণমূলের দলদাস’ বলে আক্রমণ করেছেন করিমপুর বিধানসভার বিজেপির কনভেনার মৃগেন বিশ্বাস। যদিও পদবী পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি তিনি। তাঁর কথায়, “ওটা ওঁর ব্যাক্তিগত বিষয়”।
অন্যদিকে, করিমপুরের সিপিএমের ১ নম্বর এরিয়া কমিটির সম্পাদক সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও এমনই মন্তব্য করেন। তাঁরও দাবী, “উনি যেভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনৈতিক রং লাগিয়েছেন, তা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়”।