রাজ্য

‘আমার কাজের ধরণ একটু আলাদা, বিচারব্যবস্থা সকলের জন্য সমান’, অকপটে জবাব বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

প্রাথমিক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় এখন সকলের মুখে মুখে ঘুরছে একটাই নাম, তা হল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর একের পর এক পর্যবেক্ষণ এক একটা ঝড়ের সমান বলা যেতে পারে। কলকাতা হাইকোর্টের এই বিচারপতি যেন চাকরিপ্রার্থীদের কাছে ভগবান তুল্য। এবার এক আইন কলেজের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, “বিচারব্যবস্থা সকলের জন্য সমান”।

আজ, শনিবার শিলিগুড়ি সংলগ্ন সুকনার একটি বেসরকারি আইন কলেজের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানে ইয়ুথ পার্লামেন্টের সূচনা করেন তিনি এদিন। সেই অনুষ্ঠানেই বিচারপতিকে নিয়োগ সংক্রান্ত বেনিয়মের অভিযোগ জানাতে হাজির হয়েছিলেন এক চাকরিপ্রার্থী। তাঁর নাম মারিয়া আসুন্তা তিরকে। তিনি শিলিগুড়ি সংলগ্ন নকশালবাড়ি ব্লকের গঙ্গারাম চা বাগানের সুকান্তপল্লির বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।

জানা যাচ্ছে, তিনি ২০১০ সালে ওই ব্লকেরই সেন্ট পিটার্স গয়াগঙ্গা হাইস্কুলে হিন্দি বিষয়ে সহকারি শিক্ষিকার পদে আবেদন করেছিলেন। তাঁর কথায়, আবেদনের পর তাঁর নাম আসে প্যানেলের এক নম্বরে। কিন্তু অভিযোগ, তৎকালীন স্কুল কর্তৃপক্ষ ও প্রধান শিক্ষক তাঁর পরিবর্তে প্যানেলে থাকা দ্বিতীয় স্থানাধিকারী চাকরিপ্রার্থীকে চাকরি দেন। ২০১২ সালে মারিয়া হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। এখনও সেই মামলা চলছে।

মারিয়া নিয়োগে বেনিয়ম ও মামলা সংক্রান্ত নথি নিয়ে ন্যায়ের দাবী জানিয়ে একটি চিঠিও দিয়ছিলেন। এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর কথা শোনেন। তবে তিনি জানান যে এই বিষয়টি তাঁর এক্তিয়ারের বাইরে। কারণ তিনি এই মুহূর্তে প্রাথমিক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার সঙ্গে যুক্ত। আর প্রাথমিক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা করেন নি মারিয়া।

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ওই চাকরিপ্রার্থীকে বলেন তিনি যাতে তাঁর মামলার সমস্ত তথ্য বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর কাছে পাঠান। এরপর মারিয়া বলেন, “আমার মামলা এখনও চলছে। সেজন্য আমি খবর পেয়ে বিচারপতির দ্বারস্থ হই। তিনি অবশ্য আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর কাছে আবেদন করতে বলেন”।

এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আমার কাজের ধরন একটু আলাদা। আমি বিচারব্যবস্থাকে গরিব ও পিছিয়ে পড়া মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। এটা তাঁদের অধিকার। আর আমি সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি। অনেক গরিব মানুষ অভাবের কারণে হাইকোর্টে যেতে পারেন না। কিন্তু বিচারব্যবস্থা সবার জন্য সমান”।

Back to top button
%d