রাজ্য

‘তাপসকে ঘুষের টাকা দিইনি বলে এই হাল হয়েছে’, নিয়োগ দুর্নীতিতে ধরা পড়ার পরই মন্তব্য কুন্তলের, তাপসের বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডি-র হাতে আজ, শনিবার সকালেই গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষ। এরপরই বিস্ফোরক মন্তব্য করে তাঁর দাবী তাঁর এই গ্রেফতারির নেপথ্যে ষড়যন্ত্র রয়েছে। অভিযোগ করে তিনি বলেন যে মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলকে ঘুষের টাকা না দেওয়ার কারণেই তাঁর এমন অবস্থা হল।

এদিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ চিনার পার্কের ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার করা হয় কুন্তলকে। পুলিশ ভ্যানে ওঠার আগে সাংবাদিকদের সামনে বিস্ফোরক মন্তব্য করে কুন্তল বলেন, “২০১৫ সাল থেকে তাপস মণ্ডলকে চিনি। আমার থেকে ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষ চেয়েছিল তাপস। ঘুষের টাকা না দেওয়ায় এই হাল। পুরোটাই তাপস মণ্ডলের ষড়যন্ত্র। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে”। একথা বলে গাড়ি চড়ে ফ্ল্যাট চত্বর ছেড়ে বেরিয়ে যান কুন্তল ঘোষ।

যদিও কুন্তলের এই বিস্ফোরক অভিযোগকে বিশেষ আমলই দিতে নারাজ তাপস মণ্ডল। এক সংবাদমাধ্যমে তাঁর দাবী, “আমার কী দরকার ব্ল্যাকমেল করার! আমার সঙ্গে কি ওর শত্রুতা আছে? আমি ওকে বলেছিলাম টাকা ফেরত দাও। আমি তো বলিনি আমাকে টাকা দিতে। আমি গরিব মানুষের টাকা ফেরত দিতে বলেছিলাম। বলেছিলাম, কাজ দিতে পারনি, ওদেরকে টাকা দিয়ে দাও”।

তাপসের আরও দাবী, “আমার পরিচিত একাধিক চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে মোট ১৯ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কুন্তল। তাঁরা চাকরি না পেয়ে কুন্তলের বাড়িতে বারবার হানা দিত। সেই সময় কুন্তলকে বারবার ওই টাকা ফেরত দেওয়ার কখা বলেছি। এছাড়া আর এক পয়সাও চাইনি। যা তথ্য আমার কাছে রয়েছে তা আমি সিবিআই আর ইডিকে জানিয়েছি। কারণ, আমি বরাবরই তদন্তে সহযোগিতা করছি”।

তাপসের কথায়, চার্জশিটে নাম আছে বলে কুন্তল তাঁকে ফাঁসাচ্ছেন। এই প্রসঙ্গে তাপস মণ্ডল বলেন,  “সে তো বলবেই…। আমি চাই তদন্ত হোক”। তাপস মণ্ডলের কথায়, কুন্তলের মতো আরও এজেন্ট থাকতে পারে বলে। তবে তিনি বলেন, “কুন্তলের ব্যাপারে তথ্য প্রমাণ পেয়েছি বলেই অভিযোগ তুলে ধরেছি”।

বলে রাখি, কিছুদিন আগেই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল অভিযোগ আনেন যে এসএসসি ও টেট দুর্নীতিতে কুন্তল ঘোষ নানান চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ১৯ কোটি টাকা নিয়েছেন। এই ব‌্যাপারে কিছু নথি দেন তাপস মণ্ডল। যা এখন রয়েছে সিবিআইয়ের কাছে। সেই নথিগুলি যাচাই করতেই গত বুধবার কুন্তলকে নিজাম প‌্যালেসে নিজেদের দফতরে তলব করে সিবিআই।  গতকাল, শুক্রবার কুন্তলের নিউটাউনের চিনার পার্কের জোড়া ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় ইডি। একটানা প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে চলে তল্লাশি। রাতভর দফায় দফায় জেরাও করা হয় কুন্তলকে। তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে ভোররাতে প্রথমে তাঁকে আটক করে ইডি। এর কিছু ঘণ্টার মধ্যেই গ্রেফতার করা হয় কুন্তলকে।

Back to top button
%d