রাজ্য

ধর্ম পরিবর্তনের শাস্তি! ফতোয়া জারি করে গ্রামের একাধিক পরিবারে পানীয় জল বন্ধ করে দিল মাতব্বররা, ভাঙা হল জলের কলও

ধর্ম পরিবর্তন করার শাস্তি। গ্রামের একাধিক পরিবারে পানীয় জল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল গ্রামের মাতব্বরদের বিরুদ্ধে। সরকারি কলের মুখও ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকি, ফতোয়া জারি করে জানানো হয়েছে যাতে ওই পরিবারদের কোনও বাড়ি থেকে জল না দেওয়া হয়। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার সামাট গ্রামে।

কী অভিযোগ উঠেছে?

গ্রামের বাসিন্দা পুতুল সামাট, মঞ্জুরী, টোটা সামাট বা চঞ্চলা সয়দের অভিযোগ, গত শনিবার থেকেই পাড়া ও পাড়ার বাইরের কয়েকজন এসে তাদের পানীয়জল বন্ধ করেছে। কলের মুখ খুলে সিল করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রশাসনের তরফ থেকে জলের কল বসানো হলেও আবার সেই কল ভেঙে দিয়েছে।

জানা গিয়েছে, এই বিষয়টি ব্লক প্রশাসনের নজরে আসতেই দাসপুর থানার পুলিশ কলগুলি সারিয়ে দেয়। কিন্তু ফের সেই মাতব্বররা কলের সঙ্গে পাইপও ভেঙে দিয়েছে বলে অভিযোগ। পানীয় জল না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মঞ্জুরী দেবী।

আকুতি-মিনতি করে তিনি বলেন, “বাড়িতে ছেলেমেয়ে আছে। একা একাই সবাই দোকান বাজার, স্কুলে, টিউশনে যায়। নতুন করে আবার না সমস্যা তৈরি হয়”। তাঁর আকুতি, দ্রুত তাঁদের পানীয়জল চালু করুক প্রশাসন। তবে গ্রামের মাতব্বরদের এমন ফতোয়ার সঠিক কারণ প্রকাশ্যে বলতে চাননি কেউ। তবে স্থানীয়সূত্রে খবর, কয়েকটি পরিবার অন্য ধর্মে দীক্ষিত হওয়াতেই বন্ধ করা হয়েছে জল।

কিন্তু কেন এভাবে বন্ধ করা হল পানীয় জল?

সূত্রের খবর, ওই গ্রামের কয়েকটি পরিবার নাকি আদিবাসী ধর্ম ছেড়ে অন্য ধর্মে দীক্ষিত হয়েছে। সেই কারণেই তাদের শাস্তি স্বরূপ পানীয় জল বন্ধ করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এই বিষয়ে গ্রামের মাতব্বরদের কেউ মুখ খোলেন নি।

এই বিষয়ে আদিবাসী সংগঠনের উন্নয়নের মঞ্চের নেতা রাকেশ নায়েক বলেন, “এলাকার কয়েকটি আদিবাসী পরিবার অন্য ধর্মে দীক্ষিত হয়েছে। তাই একটা সমস্যা হয়েছে। পুলিশ থেকে বিডিও সকলেই জানে, দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে”। অন্যদিকে, এই বিষয়ে রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান চিন্ময় চক্রবর্তী জানান, “আমাদের বিষয়টি জানা ছিল না, তবে আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি”।

Back to top button
%d bloggers like this: