‘পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হচ্ছে, গণতন্ত্রকে বাঁচান, মানুষের কান্না শুনুন’, বিচারপতিদের কাছে আর্জি মমতার

যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো রক্ষার দাবী নিয়ে ফের একবার সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিন মিডিয়া ট্রায়ালের (media trial) বিরুদ্ধেও ফের মুখ খুললেন তিনি। আশঙ্কা প্রকাশ করে মমতা বলেন যে দেশ ক্রমশ রাষ্ট্রপতি শাসনের (President Rule) দিকে এগোচ্ছে। এমন অবস্থায় বিচারব্যবস্থাই (judicial bench) একমাত্র দেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে পারে বলে বিশ্বাস মমতার।
আজ, রবিবার বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ জিউরিডিক্যাল সায়েন্সেস-এর ১৪তম সমাবর্তনে যোগ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের এই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য উদয় উমেশ ললিত, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব-সহ বহু বিশিষ্ট জন। ছিলেন রাজ্যের তিন মন্ত্রী। সেই মঞ্চ থেকেই বিচারব্যবস্থার কাছে গণতন্ত্রকে রক্ষার আবেদন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি, মিডিয়া ট্রায়াল নিয়েও এদিন গর্জে ওঠেন তিনি।
এদিন বিচারপতিদের সামনে অভিযোগ করে মমতা বলেন, “বিচারের আগেই মিডিয়া ট্রায়াল হচ্ছে। মিডিয়া বিচারব্যবস্থাকে গাইড করছে”। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “সংবাদমাধ্যম বিচার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তারা কাউকে অপরাধী বলে দাগিয়ে দিতে পারে না। আমার সম্মান নষ্ট করে দিতে পারে না এরা। মানুষের সম্মানই বড়। আমাদের সম্মান চলে গেলে সব চলে যায়”।
এখানেই শেষ নয়। এদিন বিচারব্যবস্থার কাছে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ, “যাঁরা নেতৃত্বে আছেন, যাঁরা ভবিষ্যতে যাবেন এই জায়গায়, আপনাদের সকলের কাছে অনুরোধ, যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো রক্ষা করুন। অযথা মানুষকে হেনস্তা করা হচ্ছে”।
দেশের প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে এদিন মমতা বলেন, “ললিতজি আগামী মাসেই অবসর নেবেন। এই দু’মাসে আমরা দেখেছি বিচারব্যবস্থা কাকে বলে! আমি বলছি না বিচারব্যবস্থা থেকে মানুষের বিশ্বাস উঠে গিয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি খারাপ থেকে খারাপ হচ্ছে”।
মমতা আরও বলেন, “এমন পরিস্থিতিতে বিচারব্যবস্থাই একমাত্র মানুষকে বিপর্যয় থেকে বাঁচায়। বিচারব্যবস্থা মানুষের কান্না শুনুক”। এদিন মুখ্যমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “একদল মানুষ গণতান্ত্রিক কাঠামোকে কুক্ষিগত করার চেষ্টা করছে। আড়ালে অনেক কিছু হচ্ছে। দেশ ক্রমশ রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে যাচ্ছে”। যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো, দেশ, গণতন্ত্রকে একমাত্র বিচারব্যবস্থাই রক্ষা করতে পারে বলে বিশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর।