WB Election 2021: “নিরস্ত্র-নিরীহ মানুষকে গুলি করে মারল সিআইএসএফ, বলছে কি না সেলফ ডিফেন্স! লজ্জা করে না, ছি ছি!!!” -মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

কোচবিহারের জনসভা থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। সেই অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন তাঁর হাতে শো-কজ লেটারও ধরায়। কিন্তু হিংসা সেই হলই। কোনওভাবেই রোখা গেলোনা মৃত্যু। চতুর্থ দফার ভোটেও রক্তাক্ত হল বাংলা।
তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ সকালেই কোচবিহারের শীতলকুচিতে এক জন নতুন ভোটারের মৃত্যু হয়, তারপর কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চারজন তৃণমূল সমর্থকের মৃত্যুতে গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন হিঙ্গলগঞ্জের নির্বাচনী সভা থেকে কমিশনকে তোপ দেগে বলেন, “কয়েক জন নিরস্ত্র-নিরীহ মানুষকে গুলি করে খুন করল সিআইএসএফ। আর বলছে কি না সেলফ ডিফেন্স! লজ্জা করে না, ছি ছি!!!’
আরও পড়ুন- কসবায় তৃণমূল বাহিনীর হামলা, আক্রান্ত বিজেপি প্রার্থী ইন্দ্রনীল খাঁ, নীরব পুলিশ প্রশাসন
এদিন হিঙ্গলগঞ্জে জনতার উদ্দেশ্যে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “এদিন সিআরপিএফ গুলি চালিয়ে চারজন মানুষকে মেরে দিয়েছে শীতলকুচিতে। আমি বারবার বসে আসছি, সিআরপিএফ আমার শত্রু নয়। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায় যে চক্রান্ত চলছে, আজকে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। লাইন দাঁড়ানো চারজন ভোটারকে গুলি করে মেরে দিয়েছে। এত ঔদ্ধত্য আসে কোথা থেকে, এত অত্যাচার আসে কোথা থেকে। বিজেপি জানে ওরা হেরে গিয়েছে, তাই ভোটারদের গুলি করে মারছে, কর্মীদের গুলি করে মারছে। লজ্জাও করে না! আমি তবু মানুষকে বলব শান্ত থেকে ভোট নির্বিঘ্নে পালন করুন, কোনও অশান্তিতে যাবেন না।”
শীতলকুচির ঘটনায় স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মী দাবি করেছেন, ‘‘দলে দলে মানুষ ভোট দিতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় বিনা প্ররোচনায় গুলি চালায় কেন্দ্রীয় বাহিনী।’’
কিন্তু ঘটনা কিছু অন্যই বলছে, সকাল থেকেই তেতে রয়েছে শীতলকুচি। বেলা দশটা নাগাত এখানেই একটি বুকে গন্ডগোলের খবর পেয়ে উপস্থিত হয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। তখন তাঁদের ঘিরে ধরে প্রায় জনা পাঁচশো লোক। আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। মৃত্যু হয় ৪ জনের। কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালাতে শুরু করলে চোখের পলক ফেলার আগে ফাঁকা হয়ে যায় ভিড়। বাহিনীর গুলিতে চারজনের মৃত্যুর খবরে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায় জোড়পাটকি এলাকায় l
কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করার এই পরামর্শ কিছুদিন আগেই কোচবিহারের সভা থেকে দিয়েছিলেন জননেত্রী।
এদিনের সভা থেকে অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, “মনে রাখবেন যাঁরা অশান্তি করে তাঁরা রাক্ষসের দল, আর যাঁরা শান্তিরক্ষা করে তাঁরা মানুষের দল। মানুষের দলকে মানবিকতা দিয়ে রক্ষা করতে হবে। কী অন্যায় করেছিল ওঁরা, তুমি চাও বিজেপি ভোটে জিতুক? তুমি কে? মানুষ ঠিক করবে তাঁরা কাকে ভোটে দেবে না দেবে।” এরপরই অমিত শাহের বিরুদ্ধে এজেন্সি দিয়ে ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ আনেন তিনি। বলেন, “এর বদলা নিতে হবে, এর বদলা একটা করে ভোট ভোটের বাক্সে, নাহলে ওঁদের আত্মার শান্তি হবে না।”
কমিশনের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবেকে কটাক্ষ করে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রিটায়ার্ডের অজুহাত দিয়ে সুরজিৎ পুরকায়স্থকে সরিয়ে দিল, আমার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অশোক চক্রবর্তীকেও সরিয়ে দিল। এদিকে রিটায়ার্ড লোক বিবেক দুবে কী করে ভোট পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন, কমিশনকে প্রশ্ন করছি, আমার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রশ্ন করা। কী ভাবে রিটায়ার্ড লোক কমিশন ভোটের দায়িত্বে রয়েছেন? আমার দলেরই ১২ জন নেতা খুন হয়েছেন। প্রায় ১৭-১৮ জন খুন হয়ে গেল, পঞ্চায়েত নির্বাচনেও এত খুন হয়নি। লজ্জা হওয়া উচিত আপনাদের!