রবিনসন স্ট্রীটের ছায়া হুগলিতে, ৩ দিন ধরে মৃত মেয়ের দেহ আগলে বসে থাকলেন ৮৫ বছরের বৃদ্ধা মা

রবিনসন স্ট্রীটের ছায়া দেখা গেল হুগলিতে। টানা ৩ দিন মৃত মেয়ের দেহ আগলে বসে রইলেন বৃদ্ধা মা। ঘটনা জানাজানি হতেই সেখানে পৌঁছয় পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য। এই ঘটনায় বেশ শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়।
ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির আরামবাগের গৌরহাটি এলাকায়। মৃত মহিলার নাম মাধুরী দত্ত। বয়স ৫৮ বছর। মৃতার মায়ের নাম গীতা দত্ত। তাঁর বয়স ৮৫ বছর। মা ও মেয়েই থাকতেন ওই বাড়িতে। বৃদ্ধা মায়ের দেখাশোনা করা, তাঁকে খাওয়ানো সবই করতেন মাধুরী।
অসুস্থতার কারণেই মাধুরীর মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। স্থানীয়দের দাবী, বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন মাধুরী। মায়ের সঙ্গেই থাকতেন তিনি। কিন্তু অসুস্থতার কারণে যে মেয়ের মৃত্যু হয়েছে, তা বুঝে উঠতে পারেননি ওই বৃদ্ধা। ফলে তিনি মেয়ের মৃতদেহের সঙ্গেই কাটাচ্ছিলেন।
মৃতদেহ থেকে পচা দুর্গন্ধ ছড়ায় এলাকায়। প্রথমে স্থানীয়রা তা বুঝতে পারেননি। দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে তারা দেখেন, ওই বাড়িতে মেয়ের মৃতদেহ আগলে রয়েছেন বৃদ্ধা মা। খবর পেয়ে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আরাগবাগ থানার পুলিশ পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই জানা যাবে মৃত্যুর আসল কারণ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মৃতার এক বোন ও দুই ভাই রয়েছে। কিন্তু তারা কেউ মা বা দিদির খোঁজ নেন না। মাধুরী অবিবাহিতা ছিলেন। মায়ের কাছেই থাকতেন তিনি।
ওই বৃদ্ধার এক আত্মীয় জানান, গীতাদেবী বুঝতে পারেননি যে তাঁর মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। মেয়েকে জীবিত ভেবেই তাঁর সঙ্গে দিন কাটাচ্ছিলেন তিনি। মেয়েকে হারিয়ে মানসিক রোগী হয়ে পড়েছেন গীতাদেবী। পাশেই মৃতার এক ভাইয়ের বাড়ি রয়েছে। কিন্তু তিনি কোনও খোঁজ নেননি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবী, পুলিশ তদন্ত করে দেখুক ঠিক কী কারণে মৃত্যু হয়েছে মাধুরীদেবীর।