রাজ্য

BREAKING: ‘বাংলার কাছ থেকে যা কেড়ে নেওয়া হয়েছে, সব ফিরিয়ে দেব’, ব্রিগেড থেকে ‘আসল’ পরিবর্তনের ডাক মোদীর

বেলা ২.৩০টে, লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশে গমগম করছে ব্রিগেড। তখনই এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, ব্রিগেডে পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রেসকোর্সে হেলিপ্যাডে নেমে সোজা ব্রিগেডের মঞ্চ। উপস্থিত জনতার উচ্ছাসে তখন চারিদিক ফেটে পড়ার জোগাড়।

মঞ্চে উপস্থিত হতেই মোদীর জয়ধ্বনি উচ্চারণ হল চারিদিক থেকে। মঞ্চে তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে দিলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। তাঁকে মঞ্চে স্বাগত জানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আজ ব্রিগেডেই গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন মিঠুন চক্রবর্তী।

এদিন ভাষণের প্রথমেই মোদী বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ ও কলকাতার ভাইবোনদের আমার প্রণাম। আমি রাজনৈতিক জীবনে অনেক স্পভা করেছি। কিন্তু এইরকম জনসমাবেশ আগে দেখিনি। রাস্তায় আজ মানুষের ঢল নেমেছে। যা বাংলার ছেলে মিঠুন চক্রবর্তীও রয়েছীই মঞ্চে”। আরও বলেন, “বাংলা চায় উন্নতি, বাংলা চায় শান্তি, বাংলা চায় প্রগতিশীল বাংলা, বাংলা চায় সোনার বাংলা”।

এদিন ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে ‘আসল’ পরিবর্তনের ডাক দেন মোদী। এই বলে তিনি বুঝিয়ে দেন যে ১০ বছর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে যে পরিবর্তন এসেছিল, তা আসল নয়। বাংলার মানুষ দিদির উপর ভরসা করেছিল, কিন্তু দিদি সেই ভরসা ভেঙে দিয়েছেন বলে অভিযোগ মোদীর।

ব্রিগেডের সভায় মমতা, তৃণমূল-সহ বিরোধীদেরকেই বাংলা বিরোধী বলে তোপ দাগেন মোদী। বলেন, “একদিকে মমতা, বাম-কংগ্রেস আর এদের বাংলা বিরোধী মনোভাব, আর অন্যদিএক বাংলার মানুষ কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে । বাংলার মানুষের আশীর্বাদে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন সফল হবেই। এখানে আজ মানুষ বাংলার পরিবর্তনের জন্য এসেছেন। এই ব্রিগেড থেকেই আমি আসল পরিবর্তনের বিশ্বাস জাগাতে চাই”।

এদিন মোদী এই আসল পরিবর্তন শব্দটি বেশ কয়েকবার ব্যবহার করেন। তিনি বলেন, “আসল পরিবর্তনের মন্ত্র বাংলার সরকারের প্রেরণা হবে। আসল পরিবর্তন মানে, এমন বাংলা যেখানে শিক্ষা, কর্মসংস্থানের সুজগ পাবে। ব্যবসায় বিনিয়োগ বাড়বে। আদিবাসী, দলিত, পিছিয়ে পড়া, বঞ্চিত মানুষ, সকলকে সমান গুরুত্ব দেওয়া হবে। সবকা সাথ, সবকা বিকাশ মন্ত্র হবে। উন্নয়ন সকলের হবে, তোষণ কারও হবে না। অনুপ্রবেশ রুখে দেওয়া হবে। আমরা ক্ষমতায় এলে আপনাদের জন্য বাঁচব। ২৪ ঘণ্টা কাজ করব। আপনাদের আশীর্বাদ নেব। নিজেদের কাজের মাধ্যমে ভালোবাসা অর্জন করে নেব”।

আগামী ২৫ বছরের জন্য বাংলার জন্য রোডম্যাপের ছক তৈরি করেছেন মোদী। তিনি বলেন, “যা যা বাংলার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তা সব ফিরিয়ে দেওয়া হবে। আগামী ২৫ বছরের উন্নয়নে আধার হবে আগামী ৫ বছরের বিকাশ। দেশ যখন স্বাধীনতার ১০০ বছর পালন করবে, তখন যেন আবার দেশের অগ্রগণ্য রাজ্যগুলি এক হয়”।

আরও পড়ুন- প্রকাশ হল বিজেপির প্রার্থী তালিকা, কারা কারা আছে এই তালিকায়, দেখে নিন-

এদিন বাংলার মানুষকে আশ্বস্ত করে মোদী বলেন, “ক্ষমতায় আসার পর ঝুপড়িবাসীদের জন্য পাকা বাড়ি দেওয়া হবে। বয়স্ক থেকে যুব স্মাজ, সকলের জন্য প্রকল্প হবে। পুনরায় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে”। তাঁর কথায়, ইঞ্জিনিয়ারিং, ডাক্তারি বাংলা ভাষায় পড়ানো হবে। পড়ুয়াদের ইংরেজি না পড়লেও চলবে। মোদীর অভিযোগ, স্বাধীনতার পর কংগ্রেস ক্ষমতায় এসে কিছুটা কাজ করেছিল, কিন্তু এরপর ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি শুরু হয়।

মোদী বলেন, যে বামেরা একদিন কংগ্রেসকে বলেছিল যে কংগ্রেসের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও। তাই তিনি প্রশ্নও রাখেন যে এখন কী তাহলে কংগ্রেসের হাত সাদা হয়ে গেল, নাহলে তাদের হাত ধরছে কী করে? মোদীর কথায়, বাংলা এখন এক সুরে বলছে, ‘আর নয় অন্যায়’। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে বলেন, “বাংলার মানুষ আপনাকে দিদির ভূমিকায় দেখতে চেয়েছিল, তাহলে আপনি কেন একজনের পিসি হয়ে থেকে গেলেন, কেন বাংলার লক্ষ লক্ষ ভাইপো-ভাইঝিদের পিসি হতে পারলেন না”।

আরও পড়ুন- দিদির ‘Important Person’ বলাগড়ের প্রার্থী মনোরঞ্জন ব্যাপারী অভিযুক্ত যৌন হেনস্থায়, জমা পড়ছে প্রমাণের স্ক্রীনশট!

প্রধানমন্ত্রীর কথায়, তৃণমূল এখন বিজেপিকে ভয় পেয়ে বলতে শুরু করেছে, ‘খেলা হবে’, কারণ বিজেপি বাংলার কৃষকদের জন্য অ্যাকাউন্টে টাকা দিতে চেয়েছেন, কিন্তু বাংলার সরকার তা আটকে দিয়েছে। মোদীর কথায়, বাংলায় আজ পদ্ম ফুটছে কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল পাঁক ছড়িয়েছে। মোদীর মতে, সেই দিদি এখন আর নেই যিনি বামেদের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন, এখন দিদির রিমোট কন্ট্রোল অন্য কারোর হাতে আছে বলে দাগেন তিনি। এও বলেন যে বিজেপিদের এখন বহিরাগত বলা হচ্ছে, তাহলে তো কংগ্রেসও বহিরাগত। এই কংগ্রেস থেকেই তৃণমূলের জন্ম, তাহলে কি ওরা বহিরাগত নয়?

মোদীর জবাব, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের দল বিজেপি বাংলা থেকেই তৈরি। পদ্মে বাংলার সুবাস রয়েছে। মোদীর হুংকার, লোকসভা ভোটের মন্ত্র ছিল চুপচাপ পদ্মে ছাপ, এবারের মন্ত্র জোরছে ছাপ, টিএমসি সাফ।

Back to top button
%d