‘অনেক শত্রুর সঙ্গে কাজ করেছি’, এবার নিজের এককালের সহকর্মীদের ঘাড়ে দোষ চাপালেন নিয়োগ দুর্নীতিতে জেলবন্দি পার্থ

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির জেরে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিজের জামিন নিয়ে এর আগে বারবার সওয়াল করেছেন তিনি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। নিজের থেকে দায় ঝেড়ে ফেলতে এবার নিজের সতীর্থদের নিশানা করলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী।
কী বললেন পার্থ?
সোমবার পার্থকে আদালতে পেশ করা হলে তিনি দাবী করেন, “আমি জানি আমার শত্রু রয়েছে। অনেক শত্রুই আমার সঙ্গে কাজ করেছে”। তাঁর এহেন মন্তব্য নিয়ে বেশ চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। তাঁর এই মন্তব্য থেকে প্রশ্ন উঠেছে যে দলের সতীর্থদের কী শত্রু বলে দাগলেন পার্থ? সেই শত্রু কারা, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে জল্পনা।
প্রসঙ্গত, গতকাল, সোমবার শিক্ষা দফতরের গ্রুপ সি-র নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, শান্তিপ্রসাদ সিংহ, নীলাদ্রি দাস, অশোককুমার সাহাকে আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তোলা হয়। তাদের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন জানান। সিবিআইয়ের আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেন। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত অভিযুক্তদের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
মুখ্যমন্ত্রীকেও এদিন নিশানা করেন পার্থ
সোমবার আলিপুর আদালত থেকে বেরোনোর সময় পার্থ দাবী করেন, “বিভিন্ন দফতরের সচিবরা মন্ত্রীকে রিপোর্ট করেন। মন্ত্রীরা রিপোর্ট করেন মুখ্যমন্ত্রীকে। নিয়োগ দুর্নীতিতে আমার কোনও ভূমিকা নেই”।
পার্থর এই মন্তব্যে প্রশাসনিক মহলের মত, যে কোনও নিয়োগের জন্যই মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতির প্রয়োজন পড়ে। তাঁর মানে এই নয় যে সংশ্লিষ্ট নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জড়িত থাকবেন। ওই মহলের কথায়, পার্থ-ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে টাকার পাহাড় উদ্ধারের ঘটনায় এটা স্পষ্ট যে দুর্নীতি হয়েছে। সেই কারণেই পার্থ তদন্ত ঘোরানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর প্রসঙ্গ টেনেছেন।
নিজের প্রভাবশালী তত্ত্ব মানতে নারাজ পার্থ
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বারবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রভাবশালী তত্ত্ব তুলে ধরেছে। এদিন আদালতে এ নিয়ে কথা বলেন পার্থ। বলেন, ২০২১ সালের আগেই তিনি শিল্প দফতরে বদলি হয়ে যান। দলে পাঁচটি পদ ছিল তাঁর। কিন্তু এখন কিছুই নেই। সমস্ত পদ হারিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবী, তাঁর নামে শুধুশুধু দোষ দেওয়া হচ্ছে। তাঁর প্রশ্ন, “একজন ডেটা এন্ট্রি অপারেটর কী করেছেন, সেই কারণে তিনি দায়ী নন”।