ভুয়ো শিক্ষকের তালিকায় নাম, তালিকা প্রকাশের পর বেপাত্তা অনেকেই, আসছেন না স্কুলে, শুরু তুমুল জল্পনা

গত মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে নবম-দশম শ্রেণীতে নিয়োগ হওয়া ৪০ জন ভুয়ো শিক্ষকের তালিকা প্রকাশ করেছিল এসএসসি। আর এরপরই একাধিক জেলা থেকে খবর আসছে যে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নাম ওই তালিকায় রয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকেই এখন বেপাত্তা। স্কুলেই আসছেন না অনেকেই।
এর আগে অবৈধভাবে যারা চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ, তেমন ১৮৩ জনের নাম প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। এরপরে আরও ৪০ জনের ভুয়ো সুপারিশের হদিশ মিলেছে। এসএসসি-র তালিকায় সেই ৪০ জনের নাম, রোল নম্বর-সহ ওএমআর শিট (উত্তরপত্র) এবং মার্কশিট প্রকাশ করা হয়েছে। সেগুলি মিলিয়ে দেখে এই সব শিক্ষক-শিক্ষিকার নাম পাওয়া যাচ্ছে।
যেমন, বীরভূমের সিউড়ি শহরের বাসিন্দা এক শিক্ষিকা। ওই মহিলা মুর্শিদাবাদের সুতি ২ ব্লকের একটি কো-এড স্কুলের বাংলার শিক্ষিকা। প্রধান শিক্ষক এ দিন বলেন, “ওই নামে এক জন বাংলা শিক্ষিকা আমাদের স্কুলে রয়েছেন। তবে, তিনি মাতৃত্বকালীন ছুটিতে। এসএসসির কোর্টের নির্দেশে ‘ভুয়ো’ শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করার খবর শুনেছি। শুনেছি সেখানে তাঁর নাম আছে। তবে আমরা কোনও কিছু নির্দেশ পাইনি”।
ওই শিক্ষিকার সঙ্গে যোগাযোগ করা না-গেলেও তাঁর মা বলেছেন, “আমার মেয়ে অন্যায় ভাবে চাকরি পায়নি। কেন এমন ভুয়ো তালিকায় নাম এল, নম্বর বাড়ল, জানি না। আমরা হাই কোর্টে যাব”।
টেট সাদা খাতা জমা দিয়েছিলেন কিন্তু তা সত্ত্বেও স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছিলেন মুর্শিদাবাদের ডোমকলের এক ব্যক্তি। ওই তালিকা বেরোনোর পর এমনটাই অভিযোগ উঠেছে। স্কুল সূত্রে খবর, তিনি গত ৬ বছর ধরে ওই স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। কিন্তু তিনি বেশ কয়েকদিন ধরে তিনি আর স্কুলে আসছেন না বলে জানান প্রধান শিক্ষক।
এই ‘ভুয়ো’ শিক্ষকের তালিকায় নাম উঠেছে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর এক শিক্ষিকার নাম। স্কুল সূত্রে খবর, তিনিও বুধবার থেকে স্কুলে আসছেন না। তাঁর বাড়ি থেকে স্কুলকে জানানো হয়েছে, মন-মেজাজ ভাল না থাকায় স্কুলে যেতে পারছেন না তিনি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, “২০১৯ সালে ইতিহাসের শিক্ষিকা হিসাবে কাজে যোগ দেন ওই যুবতী। বিষয়টি নিয়ে সরকারি ভাবে যা সিদ্ধান্ত হবে, স্কুল সেটাই মানবে”।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি ও বাম শিক্ষক সংগঠনের নেতারা বলছেন, “নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছিল, সকলেই জানেন। পেঁয়াজের খোসার মতো সেটা সামনে আসছে। আরও অনেক কিছু দেখা বাকি”।