‘এমন সন্ত্রাস কাম্য নয়, সংশোধনের প্রস্তুতি নিলে এমনটা হত না’ম পঞ্চায়েত ভোটের হিংসা নিয়ে শাসকদলকে তোপ মমতার প্রিয় ‘কাননের’

তিনি কলকাতার প্রাক্তন মেয়র। সামলেছেন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকও। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে তিনি যোগ দেন বিজেপিতে। তবে বেশিদিন সেখানে থাকতে পারেন নি। আপাতত কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মাঝে মধ্যেই দেখা-সাক্ষাৎ সারেন তিনি। তবে এবার পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা নিয়ে বিরোধীদের সুরেই সুর মিলিয়ে মমতার দলকেই দুষলেন মমতার শোভন চট্টোপাধ্যায়।
কী বলছেন শোভন?
এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শোভন বলেন, “এই সন্ত্রাস কাম্য নয়। সংশোধনের প্রস্তুতি নিলে এমনটা হত না”। নিজের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শোভনের দাবী, “গণতন্ত্রের জানালা, দরজা হল বিরোধীরা। সেই সুযোগটা চলে যাচ্ছে। গণতান্ত্রিক পরিসরে সেটা সুখকর নয়। বিরোধীশূন্য হওয়াটা শাসককে অসুবিধেই করে”।
পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যের নানান প্রান্ত থেকে একের পর এক হিংসার খবর উঠে আসতে থাকে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রাণ বলি হয়েছে ৫০-এরও বেশি মানুষের। প্রায় প্রতিদিনই এখনও নানান রাজনৈতিক দলের কর্মীদের মৃত্যুর খবর মিলছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, শোভন এটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে বিরোধী শূন্য পরিবেশ আদতে গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকরই।
শাসক দল তো বটেই, এর পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনেরও কটাক্ষ করেন মমতার প্রিয় ‘কানন’। বলেন, “নমিনেশনের জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হল না। শান্তিরক্ষার ক্ষেত্রেও কমিশনের প্রচুর খামতি রয়েছে”।
শুধু তাই-ই নয়, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার দুরদর্শিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শোভন। তাঁর কথায়, “সরকারি দলকে ফেবার করতে গিয়ে, দলকে অস্বস্তিতে ফেলছি কি না, সরকারের হয়ে কথা বলতে গিয়ে, সরকারকেই কালি লাগিয়ে দিচ্ছি কি না- সেটাও কিন্তু ভেবে দেখা দরকার”।
প্রসঙ্গত, কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরাও। এমনকি, কমিশনকে আক্রমণ শানাতে বাদ যান নি রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসও। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে নির্বাচন করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু ভোটের দিন অনেক এলাকাতেই দেখাই যায়নি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। রাজ্য পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও একাধিক প্রশ্ন উঠেছে।