ন্যক্কারজনক! শাস্তি দেওয়ায় শিক্ষিকাকে বিবস্ত্র করে মারধর একটি সম্প্রদায়ের ছাত্রীর পরিবারের লোকজনদের, ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাল বাকি পড়ুয়ারা

শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পড়ুয়াদের মধ্যেকার সম্পর্ক অনেকটা যেন অভিভাবক আর সন্তানদের মতোই। কারণ মা বাঁ পরিবারের পর শিক্ষক-শিক্ষিকারাই এমন মানুষ যারা আমাদের ভালোর জন্য আমাদের নানান উপদেশ দেন বা আমাদের শিক্ষা দেন। শুধু পুঁথিগত শিক্ষাই নয়, এমন অনেক শিক্ষক-শিক্ষকা রয়েছেন, যারা আমাদের জীবনে নানান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন।
পড়ুয়ার ভালোর জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকা তাদের শাসন করতেই পারেন, আর সেটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু তার জন্য যদি শিক্ষিকাকেই অপমান সহ্য করতে হয়, তার থেকে নিন্দনীয় আর কিছু হয় না। এমনই একটি ঘটনা ঘটল হিলির ত্রিমোহিনী প্রতাপচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে।
জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার এই স্কুলের এক ছাত্রীকে বকেছিলেন এক শিক্ষিকা। ছাত্রীর পিঠে মেরেছিলেন তিনি। কিন্তু তার জন্য যে তাঁকে এত বড় খেসারত দিতে হবে, তা হয়ত ভাবতেও পারেন নি ওই শিক্ষিকা। সূত্রের খবর, এই ঘটনার পরদিনই স্কুলে হাজির হয় ওই ছাত্রীর পরিবার। আর ওই শিক্ষিকার উপর হামলা চালান তারা।
জানা গিয়েছে, ওই শিক্ষিকার শাড়ি খুলে তাঁকে বিবস্ত্র করে মারধর করে একটি সম্প্রদায়ের ছাত্রীর ওই পরিবার। শিক্ষিকার গলা কেটে খুন করে স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয় ওই ছাত্রীর পরিবারের তরফে। জানা গিয়েছে, স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সামনেই ঘটে এই ন্যক্কারজনক ঘটনা। আর এই ঘটনার পর প্রধান শিক্ষক ও ওই ছাত্রীর পরিবারের মধ্যে কথা হয় আর উভয়পক্ষই জানান যাতে সমঝোতা করে এই ঘটনার মীমাংসা করা হয়।
এর প্রতিবাদেই স্কুলের বাইরে বিক্ষোভ দেখায় স্কুলের বাকি পড়ুয়ারা। তাদের দাবী, শিক্ষিকার সঙ্গে যা হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এভাবে সমঝোতা করে মীমাংসা করলে চলবে না। পড়ুয়াদের দাবী, শিক্ষিকাকে হামলা করা অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। এই কারণে এদিন প্রধান শিক্ষকের গাড়ি ঘিরেও বিক্ষোভ দেখায় সকল পড়ুয়া।
বিক্ষোভকারীদের দাবী, শিক্ষিকা কোনও পড়ুয়াকে শাস্তি দিতেই পারেন, কিন্তু তা বলে তাঁর সঙ্গে এমন আচরণ করা যায় না। এই বিক্ষোভের জেরে স্কুলের বাইরে তৈরি হয় ধুন্ধুমার কাণ্ড। পুলিশ উপস্থিত হয় স্কুলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা নিজেদের দাবীতে অনড়। অভিযুক্তদের কোনও শাস্তিও না হলে তারা বিক্ষোভ তুলবেন না বলে দাবী তাদের।
এরপরই ওই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানান স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তিনি এও আশ্বাস দেন যে ওই ছাত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই আশ্বাসের পর বিক্ষোভ তুলে নেয় পড়ুয়ারা।