রাতের অন্ধকারে বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে আগুন, ‘আর একটা বগটুই বানাতে চেয়েছিল’, ঘটনাস্থলে গিয়ে তৃণমূলকে নিশানা করে তোপ শুভেন্দুর

পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হলেও ভোট পরবর্তী হিংসা এখনও অব্যাহত। রাতের অন্ধকারে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হল দিও বিজেপি প্রার্থী-সহ ছয় কর্মী-সমর্থকদের ঘরে। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার আমতায়। আজ, শনিবার সেখানে যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে গিয়ে শাসক দলকে নিশানা করেন তিনি।
এদিন সেখান থেকে বারুইপুর যান শুভেন্দু অধিকারী। সেখানেও বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন। এদিন আক্রান্তদের পাশে দাঁড়িয়ে সাহস জোগান তিনি। আমতায় ভস্মীভূত বাড়ি ফের নতুন করে তৈরি করার আশ্বাসও দেন। এদিন আমতার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ভোট লুঠ করেও তৃণমূলের শান্তি হয়নি। আর একটা বগটুই করতে চেয়েছিল”।
কী ঘটেছে আমতায়?
বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বের অভিযোগ, তৃণমূল এবারে হাওড়ার আমতায় এবারে ভোটই করতে দেয়নি। ভোটের আগে থেকেই এখানে চলছে সন্ত্রাস। ভোট মিটতেই বিজেপি প্রার্থী কল্পনা রায়, ঝুমা রায় সহ বিজেপির ৭ জন কর্মী, সমর্থকের বাড়িতে গতকাল, শুক্রবার রাতে হামলা চালায় শাসকদলের দুষ্কৃতীরা। শুভেন্দুর অভিযোগ, থানার ওসি এবং বিডিও-র প্রশ্রয়ে তৃণমূলের গুন্ডারা তাণ্ডব চালাচ্ছে।
গতকাল, শুক্রবার রাতে এলাকার সাতটি বাড়িতে হানা দিয়ে যাবতীয় লুঠপাট চালানোর পর তাদের সকলকে ঘরের ভিতর ঢুকিয়ে বাইরে থেকে শিকল তুলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। প্রতিবেশীরা আগুন দেখে চিৎকার করেন। তারাই দরজার শিকল খুলে ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করে। এই ঘটনায় কোনওক্রমে বাড়ির বাসিন্দারা বেরতে পারলেও আগুনে পুড়ে মরেছে হাঁস,মুরগি-সহ গবাদি পশু। আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় জয়পুর থানার পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দেয় কেন্দ্রীয় বাহিনী জওয়ানরা ও পুলিশ।
এই ঘটনায় বিরোধী দলনেতা বলেন, “খবর দেওয়া সত্ত্বেও পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। তৃণমূল আর একটা বগটুই করতে চেয়েছিল। সোমবার আদালতে যাব”। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ‘খুনী মমতা নিপাত যাক’ স্লোগানও তোলেন শুভেন্দু অধিকারী। আক্রান্ত পরিবারগুলিকে আর্থিক সাহায্য দিয়েছেন, বাচ্চাদের বই কেনার জন্যও টাকা। পঞ্চায়েত ভোট লুট হয়েছে, এই অভিযোগে সরব হন বিরোধী দলনেতা।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২১ মার্চ বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখকে বীরভূমের দুবরাজপুর থানার বগটুই মোড়ে বোমা মেরে খু’ন করা হয়। সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে ওইদিন রাতেই ১২টি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ভাদু অনুগামীদের বিরুদ্ধে। আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় দশজনের। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের ধরণ বোঝাতে আমতার ঘটনায় বগটুইয়ের উদাহরণ টেনেছেন শুভেন্দু।