ছিঃ ছিঃ ছিঃ! মিড ডে মিলে রান্না হওয়া চিকেন ‘লেগপিস’ সাবাড় করে দিলেন শিক্ষকরাই, পড়ুয়াদের পাতে পড়ল শুধুই ঝোল

মিড ডে মিলের জন্য রান্না হয়েছিল মুরগির মাংস। কিন্তু মাংসের জায়গায় পড়ুয়াদের দেওয়া হল শুধুই ঝোল। কিন্তু কেন? জানা গিয়েছে, মাংসগুলি খেয়ে নিয়েছেন স্কুলের শিক্ষকরা। সেই কারণেই পড়ুয়াদের পাতে পড়েছে ঝোল। এমন নজিরবিহীন ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের ইংলিশবাজার ব্লকের অমৃতি কলোনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এই ঘটনার প্রতিবাদে স্কুলের প্রধান শিক্ষক-সহ বাকি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তালাবন্দি করে রেখে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকরা।
রাজ্য সরকারের নির্দেশে মিড ডে মিলের মেনুতে যোগ হয়েছে মুরগির মাংস ও ফল। জানা গিয়েছে মালদহের ওই অমৃতি কলোনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা ২৫০ জন। অভিভাবকরা জানিয়েছেন স্কুলে ২৫০ জন পড়ুয়া থাকলেও মিড ডে মিলের জন্য ৩০০ জন পড়ুয়ার মুরগির মাংস কিনে আনা হয় স্কুলে।
তারপর শিক্ষকদের একাংশ রাঁধুনিকে জানান যাতে চিকেন লেগপিসগুলি আলাদা করে কষে রান্না করেন। আর তার সঙ্গে ১০ জনের জন্য সরু চালের ভাত। সেই খাবার খাবেন শিক্ষকরা। লেগপিস ছাড়া বাকি অংশের মাংস রান্না করা হয় পড়ুয়াদের জন্য। আর লেগপিস খান শিক্ষকরা। সেই খবরই ফাঁস হয়ে যায় অভিভাবকদের কাছে।
আলাদাভাবে বেছে রাখা লেগ পিসগুলির ছবি পৌঁছে যায় অভিভাবকদের মোবাইলে। আর এতেই বিষয়টি জনসমক্ষে চলে আসে বলে অভিভাবকরা জানিয়েছেন। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত অভিভাবকরা স্কুলে ছুটে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অফিস ঘরে তালাবন্দি করে রাখেন। সকাল ১১টা থেকে বেলা তিনটে পর্যন্ত এভাবেই বন্দি দশায় কাটাতে হয়েছে শিক্ষকদের। শেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে ছাড়া পান তাঁরা।
রাঁধুনি স্বীকার করে নিয়েছেন যে শিক্ষকদের জন্য আলাদা করে চিকেন লেগপিস রান্না করা হয়েছে। পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ চিকেনও খেয়ে নেন শিক্ষকরা। পড়ে থাকে ঝোল। জেলাশাসকও একথা শুনে তাজ্জব বনে যান রীতিমতো। মিড ডে মিলের তদারকির দায়িত্বে থাকা আধিকারিক দল ও সংশ্লিষ্ট স্কুল পরিদর্শককে ওই স্কুলে পাঠানো হয় সবটা খতিয়ে দেখার জন্য। স্কুলে পৌঁছয় ইংলিশবাজার থানার পুলিশ। অভিভাবকদের বিক্ষোভের মুখ থেকে শিক্ষকদের বের করে নিয়ে আসে তারা।
স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের এক সদস্য এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, “গ্রামের বাসিন্দারা আমার কাছে অভিযোগ করেন, চিকেনের লেগ পিস এবং ভালো মাংস শিক্ষকরা নিজেদের জন্য রেখে দিচ্ছেন। বাকি ছাঁট মাংস পড়ুয়াদের দিচ্ছে। এই নিয়ে সবাই স্কুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। আমি এই বিষয়ে অভিযোগ জানাতে স্কুলের এসআইকে ফোন করি। উনি ফোন ধরেননি”।
মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, “অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেখানে সরেজমিনে তদন্ত করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিকদের পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে”।