রাজ্য

একদা ‘শত্রু’ বিমল এখন শাসকের ‘মিত্র’ বলে কথা! তাঁর বিরুদ্ধে চলা মামলা প্রত্যাহারের পথে রাজ্য সরকার

বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের বেশ কয়েক মাস আগেই বিজেপির সঙ্গে পাট চুকিয়ে ফের রাজ্যের শাসকদলের হাত ধরেছেন পাহাড়ি নেতা বিমল গুরুং!
উত্তরবঙ্গ জুড়ে চলছে তৃণমূলের হয়ে তাঁর ব্যাপক প্রচার। আর এবার তাঁর বিরুদ্ধে থাকা মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হতেই কি সরকারের এই সিদ্ধান্ত? প্রশ্ন উঠছে! যদিও বিষয়টিকে এইভাবে দেখতে নারাজ সরকারি মন্ত্রীরা। আদালতের মাধ্যমেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিগত ভছরের পুজোর সময় থেকেই বিমান-শাসক সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসে। পুলিশ খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েও পুলিশের উপস্থিতিতেই কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে বসে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের প্রশংসা করেন। পাশাপাশি বিজেপিকেও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। বিজেপি তাঁকে বছরের পর ধোঁকা দিয়েছে বলে অভিযোগ করে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ের জন্য যা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা করেছেন বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছিলেন গোর্খাদের সঙ্গে প্রতারণা করলে কী হয়, তা তিনি রাজু বিস্তা ও দিলীপ ঘোষদের বুঝিয়ে দেবেন।

তাৎপর্যপূর্ণভাবে, আলাদা রাজ্যের দাবিতে ২০১৭-তে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল পাহাড়। দিনের পর দিন বনধের পাশাপাশি ছিল নাশকতামূলক কাজও। সেই সময় গুরুং সমর্থন পেতেন সম্পূর্ণভাবে বিজেপির থেকে। পুলিশ অফিসারকে হত্যার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় মামলা করেছিল সরকার। এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানো, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট-সহ একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছিল। সেই মামলার সংখ্যা শতাধিক বলেই জানা গিয়েছে। বিমল গুরুংকে খুঁজে না পাওয়ায় আদালতের মাধ্যমে তাঁর পাতলেবাসের বাড়ির দখল নিয়েছিল রাজ্য সরকার।

তবে এবার সময় বদলেছে। ৪টে বছর কেটেছে। অনেক জল গড়িয়েছে তিস্তা দিয়ে। আর তাই এবার বিমল গুরুং-এর বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই ব্যাপারে শনিবার নবান্ন থেকে দার্জিলিং পুলিশের কাজে নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া‌ও অবলম্বন করতে বলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এর জন্য সরকারি আইনজীবীকে আদালতে মামলা প্রত্যাহারের কারণ জানাতে হবে। বিচারক তা গ্রহণযোগ্য হলে, নির্দেশ দেবেন। তবে খুন ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা প্রত্যাহার করা হচ্ছে না বলেই জানা গিয়েছে l

বিধানসভা নির্বাচনের উত্তপ্ত আবহে রাজ্য সরকারের এমন সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনায় সরব হয়েছে বাম-বিজেপি।

Back to top button
%d bloggers like this: