এবার বাংলার মাটিতেও ফলবে দু’লক্ষ টাকা কেজি দরের আম, মালদহে শুরু হচ্ছে বিশ্বের সবথেকে মূল্যবান মিয়াজাকি আমের চাষ

জাপানে চাষ হওয়া মিয়াজাকি আমকে বিশ্বের সবথেকে মূল্যবান আম হিসেবে গণ্য করা হয়। এই আমের দাম বিশ্ব বাজারে দু’লক্ষ টাকা প্রতি কেজি। এবার সেই মূল্যবান আমই বাংলার মাটিতে চাষ করার সিদ্ধান্ত নিল কৃষি দফতর। রাজ্যের সবথেকে বেশি আম চাষ হওয়া জেলা অর্থাৎ মালদহেই এই বহুমূল্য মিয়াজাকি আম চাষ হবে বলে জানা গিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকে মিয়াজাকির বাগান তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর জন্যে ইতিমধ্যেই জাপান থেকে ওই মিয়াজাকি আমগাছের চারা নিয়ে আসার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই সেই চারাগাছগুলি এসে পৌঁছবে মালদহে।
আমের জন্য বিখ্যাত মালদহ। স্বাদে-গন্ধে ভরপুর নানান প্রজাতির আম চাষ হয় এই জেলায়। সব মিলিয়ে প্রায় একশোরও বেশি প্রজাতির আম চাষ এখানে। সেই কারণে বহুমূল্য এই মিয়াজাকি আম চাষের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে মালদহকেই বেছে নেওয়া হয়েছে।
ইংরেজবাজার ব্লক কৃষি দফতরের আধিকারিক সেফাউর রহমানের উদ্যোগেই মিয়াজাকি আম মালদহে চাষ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তিনি জানান, “একটি বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় জাপান থেকে মিয়াজ়াকি আম গাছের চারা নিয়ে আসা হচ্ছে। মোট ৫০ টি গাছের চারা আসছে। ভারতীয় টাকায় এক একটি চারাগাছের দাম পড়েছে প্রায় এক হাজার টাকা। এই গাছ গুলি থেকে কলম পদ্ধতিতে আগামীতে চারা তৈরি করা হবে। মালদহে আরও বাড়ানো হবে এই আমের চাষ”।
মিয়াজাকি আমের রঙ অন্যান্য আমের মতো সবুজ বা হলুদ নয়। কাঁচা অবস্থায় এই আমের রঙ হয় বেগুনি আর পেকে গেলে তা লাল রঙ ধারণ করে। একটি মিয়াজাকি আমের সর্বোচ্চ ওজন হয় ৩৫০ গ্রাম। ভারতীয় মুদ্রায় এই আমের দাম প্রায় দু’লক্ষ টাকা কেজি। শুধুমাত্র জাপানই, বর্তমানে থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, পাকিস্তানেও এই আমের চাষ শুরু হয়েছে।
ভারতের মধ্যপ্রদেশেও শুরু হয়েছে এই আমের চাষ। কৃষি দফতরের আশা, স্থানীয় বাজারে এই আমের দাম লক্ষাধিক টাকা না হলেও কয়েক হাজার টাকা হবেই। ফলে এই মিয়াজাকি আম চাষের ফলে জেলার অর্থনীতি আরও দৃঢ় হবে। কৃষি দফতরের কথায়, এই আম চাষের মূল উদ্দেশ্য হল বিদেশে রফতানি করা।
কিন্তু এই মিয়াজাকি আমের কেন এত দাম? বিশেষজ্ঞদের কথায়, বেশ পরিশ্রম করতে হয় এই আম উৎপাদনের জন্য আর এই প্রক্রিয়া বেশ সময়সাপেক্ষ। শুধু তাই-ই নয়, এই আমের অনেক পুষ্টিগুণও রয়েছে। ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সক্ষম এই মিয়াজাকি আম।