অফবিট

মায়ের মারণব্যাধি, বাবা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন, পড়াশোনার পাশাপাশি, ফুচকা বিক্রি করে সংসারের হাল ধরেছেন পল্লবী

বিজ্ঞাপন

Struggle of Dhupguri Girl: মায়ের ক্যান্সার তাই মাকে সুস্থ করতে ও সংসারের হাল ধরতে বাবার সঙ্গে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা বিক্রি করছে ক্লাস নাইনের বাচ্চা মেয়ে। ধুপগুড়ির জুড়াপানির বাসিন্দা পল্লবী সরকার (Struggle of Dhupguri Girl)। গত দু’বছর ধরে পল্লবীর মা মারণব্যাধিতে আক্রান্ত‌। পল্লবীর বাবা প্রকাশ বাবু গত ১৮ বছর ধরে ফুচকা বিক্রি করে চলেছেন। স্ত্রীর ক্যান্সার ধরার পর পুরো পরিবারের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে।

বিজ্ঞাপন

কথায় বলে ক্যান্সার রাজার রোগ। সামান্য ফুচকা বিক্রি করে ক্যান্সারের মতো রোগের চিকিৎসা করা মুখের কথা নয়। তবুও প্রকাশ বাবু স্ত্রীকে সুস্থ করে তুলতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাড়িতে ছোট দুটো মেয়ে, স্ত্রীর কিছু হয়ে গেলে মেয়েদেরকে কে দেখাশোনা করবে। তাই নিজের অল্প কিছু জমানো পুঁজি নিয়ে স্ত্রীকে সুস্থ করার উদ্দেশ্যে প্রকাশ বাবু পাড়ি দেন হায়দ্রাবাদ ও ব্যাঙ্গালোরের মতো জায়গায়। এতে উল্টে বিপত্তি ঘটে। স্ত্রীয়ের চিকিৎসা মাঝপথে বন্ধ রেখে বাড়ি ফিরে আসতে হয় তাকে। আর তারপরেই সংসারের হাল ধরে পল্লবী (Struggle of Dhupguri Girl)

বিজ্ঞাপন

তীব্র গরমে ঠেলা নিয়ে ফুচকা বিক্রি করছে ক্লাস নাইনে পড়া একটি মেয়ে, উদ্দেশ্য সংসারের জন্য দুটো পয়সা উপার্জন করা। ধুপগুড়ির জুড়াপানি হাই স্কুলের ছাত্রী পল্লবী। পল্লবীরা দুই বোন, পল্লবী ছোট। পল্লবীর দিদি ওই একই স্কুলে ক্লাস টুয়েলভের ছাত্রী। প্রকাশ বাবু ফুচকা বিক্রি করেই দুই মেয়েকে পড়াশোনা শিখিয়ে মানুষ করছেন। পল্লবীদের পরিবারে স্বাচ্ছন্দের অভাব থাকলেও সুখের অভাব কোনদিনও ছিল না। কিন্তু সুখের ছন্দপতন ঘটে দু’বছর আগেই (Struggle of Dhupguri Girl)। পল্লবীর মায়ের ক্যান্সার ধরা পড়ে। প্রকাশ বাবু জানতে পারেন হায়দ্রাবাদ বা বেঙ্গালুর মতো জায়গায় ভালো চিকিৎসা হয়। যদি স্ত্রীকে একবার তিনি ওখানে নিয়ে যেতে পারেন তাহলে ক্যান্সার থেকে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন পল্লবীর মা।

বিজ্ঞাপন

প্রকাশ বাবু বুঝতে পারেনি ক্যান্সারের মতো চিকিৎসার খরচা কতটা ব্যয়বহুল। আবার ব্যাঙ্গালোর বা হায়দ্রাবাদের মতো জায়গায় থাকা কতটা খরচা সাপেক্ষ। তাই প্রকাশ বাবু ফুচকা বেচে যেটুকু টাকা জমিয়েছিলেন, সেই টাকা ফুরিয়ে যেতে বেশি দিন সময় লাগেনি। বাধ্য হয়ে ফিরে আসতে হয় তাদেরকে। স্ত্রী এর চিকিৎসার খরচ, দুই মেয়ের পড়াশোনা তার মধ্যে এত পরিশ্রম প্রকাশ বাবুর পক্ষে একা সম্ভব হচ্ছিল না। মা অসুস্থ, বাবাকে দিনের পর দিন শারীরিক মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়তে দেখে এরপর বাবার পাশে এগিয়ে আসে তার দুই মেয়ে। বড়ো মেয়ে বাড়িতে ফুচকা বানিয়ে দিতে শুরু করে। ছোট মেয়ে স্কুল ছুটির পর বাবার সাথে ঠেলা নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা বিক্রি করতে শুরু করে (Struggle of Dhupguri Girl)। লক্ষ্য একটাই দুটো পয়সা বেশি আসলে ওরা ভালোভাবে মায়ের চিকিৎসা করাতে পারবে।

বিজ্ঞাপন

এই মুহূর্তে তীব্র গরমের জন্য স্কুল ছুটি পল্লবীর। তাই সকালে উঠে পড়াশোনা শেষ করে বাবার সাথে ফুচকার কাজে লেগে পরে সে। ছোট মেয়েটার এক কাঁধে পড়াশুনো আর এক কাঁধে গোটা সংসার। পল্লবী জানিয়েছেন অনেকেই তাকে এসে জিজ্ঞেস করেন, কেন তিনি এই কাজ করছেন। বাবাকে সাহায্য না করলে বাবা আর পারবেন না একথা খুব ভালোভাবেই বুঝে গেছেন দুই মেয়ে (Struggle of Dhupguri Girl)। যে বাবার পাশে তার দুই রত্ন মেয়ে রয়েছে তার আর কিসের চিন্তা।

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন

(সবার আগে সব খবর, সঠিক খবর জানতে ফলো করুন আমাদের Google News, Whatsapp, Facebook, X Handle (Twitter), Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

Back to top button