জ্যোতিষশাস্ত্র

জেনে নিন কেন জন্মাষ্টমীতে শ্রীকৃষ্ণকে ৫৬ ভোগ নিবেদন করা হয়

আজ সারা ভারত এমনকি সারা বিশ্বজুড়ে মহাসমারোহে পালিত হচ্ছে জন্মাষ্টমী। হিন্দু ধর্মমতে এই দিন ঘরে ঘরে গোপালের জন্মোৎসব পালিত হয়। এই দিনে কৃষ্ণ ভক্তরা সারাদিন উপবাসী থাকেন। আজ ঘরে ঘরে তৈরি হয় শ্রী কৃষ্ণের জন্য ৫৬ রকমের ভোগ। যার মধ্যে থাকে শুকনো ফল থেকে শুরু করে মিষ্টান্ন, জিলিপি, তালের বড়া আরও কত কি। শ্রী কৃষ্ণের জন্য কবে থেকে এই ভোগের সূচনা হয়েছিল সে বিষয় সঠিক তথ্য না থাকলেও এই ঐতিহ্য পুরাকাল থেকে মেনে আসছেন কৃষ্ণভক্তরা। তাঁদের বিশ্বাস ভগবান কৃষ্ণকে ছাপ্পান ভোগ দিলে তিনি সন্তুষ্ট হন এবং ভক্তদের মনবাঞ্ছা পূর্ণ করেন।

এই ছাপান্ন ভোগের মধ্যে ভক্তরা তাঁদের সাধ্যমতো খাবার তৈরি করে শ্রী কৃষ্ণকে নিবেদন করেন। এই ৫৬ টি ভোগের মধ্যে থাকে মাখন, মিশ্রি, ক্ষীর, বাদাম দুধ, টিক্কি, কাজু, বাদাম, পিঠা, রসগোল্লা, জিলিপি, লাড্ডু, রাবড়ি, মালপোয়া, মোহনভোগ, চাটনি, মুগ ডাল হালুয়া, পকোড়া, খিঁচুড়ি, বেগুনী, নানা ধরণের শাক-সবজি, ২০ ধরণের মিষ্টি। এছাড়া তালের বড় এবং নানা ধরণের শুকনো ফলও এই ৫৬ ভোগে দেওয়ার রীতি আছে। এই ৫৬ ভোগের নেপথ্যে একটা গল্পও রয়েছে।

শোনা যায়, দেবরাজ ইন্দ্র ব্রজবাসীদের উপর ভীষণ রেগে গিয়ে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু করেন, তখন শ্রীকৃষ্ণ তাদের রক্ষার জন্য বিশাল গোবর্ধন পর্বতকে নিজের কনিষ্ঠ আঙ্গুলের উপরে তুলে নিয়েছিলেন। এরপর টানা সাতদিন প্রবল বৃষ্টিতে সব তছনছ হয়ে গেল, ভেসে গেল। এই সময়ে ব্রজের কত প্রাণী পাখি এবং মানুষ গোবর্ধনের ছায়ায় আশ্রয় নিলেন। এরপর সাত দিন কাটলো, বৃষ্টিপাতও শেষ হলো। আশ্রিতরা সবাই গোবর্ধনের আশ্রয় থেকে বেরিয়ে এলেন।

এরপর থেকে মা যশোদা কৃষ্ণকে দিনে আটবার খাবার দিতেন। আর কৃষ্ণও আটবারই খাবার খেয়ে নিতেন। একবার মা যশোদা এবং ব্রজের বাকিরা মিলে আট ঘন্টা অনুসারে কৃষ্ণের জন্য জন্য ৫৬ রকমের ভোগ রান্না করলেন। আর শোনা যায় সেই থেকেই এই ৫৬টি ভোগ দেওয়ার রীতি শুরু হয়।

Leave a Reply

Back to top button
%d