টেট পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ভুলের জের! বয়স পেরিয়ে গেলেও ইন্টারভিউ নিয়ে দিতে হবে চাকরি, নজিরবিহীন রায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

২০১৪-এর টেট পরীক্ষা প্রশ্নপত্রে ছ’টি প্রশ্ন ভুল এসেছিল। এর জেরে উত্তীর্ণ হন নি পরীক্ষায়। তবে যতদিনে পর্ষদের তরফে জানানো হল যে প্রশ্ন ভুলের জন্য অতিরিক্ত ছয় নম্বর দেওয়া হবে, ততদিনে চাকরির বয়স পেরিয়ে গিয়েছে। এর জেরে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হ এক চাকরিপ্রার্থী। সেই মামলাতেই আজ নজিরবিহীন রায় দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন যে বয়স পেরিয়ে গেলেও পর্ষদকে ইন্টারভিউ নিতে হবে। আর তাতে পাশ করলে চাকরিও দিতে হবে চাকরিপ্রার্থীকে।
মামলার রায়দানে সময় তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বলেন, “বোর্ডের ভুল, বোর্ডকেই খেসারত দিতে হবে। প্রাথমিক পর্ষদ, যাদের এখন লোকে দুর্নীতি আর বেআইনি কাজের জায়গা হিসেবে চেনেন, তারাই বঞ্চিত ব্যক্তিকে চাকরি দেবে”। এর আগে প্রশ্ন ভুল মামলায় অনেক চাকরিপ্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট।
নেফাউর শেখ নামের এক ব্যক্তি ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষা দেন। উত্তীর্ণ হতে পারেন নি তিনি। ২০১৬ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়। পরে প্রশ্নপত্রে ছ’টি প্রশ্ন ভুল থাকার অভিযোগ তুলে মামলা করেন তিনি। ২০২১ সালে ডিসেম্বরে বোর্ডের তরফে জানানো হয় যে তিনি অতিরিক্ত ছয় নম্বর পেয়েছেন।
কিন্তু বাধ সাধে নেফাউরের বয়স। ততদিনে চাকরির বয়স পেরিয়ে গিয়েছে তাঁর। ফলে বোর্ডের ভুলে তাঁর নিয়োগ আটকে যাওয়ার অভিযোগ তুলে নেফাউর ফের মামলা করেন আদালতে। আজ, সোমবার সেই মামলারই রায় দিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
এদিন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন যে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে একটা ইন্টারভিউ বোর্ড গঠন করতে হবে। ২০১৬-এর গাইডলাইন অনুযায়ী চার সপ্তাহের মধ্যে নিতে হবে ইন্টারভিউ। তাতে যদি উত্তীর্ণ হয়, তাহলে নেফাউরকে চাকরি দিতে হবে। বিচারপতি আরও জানান যে তাঁকে প্রশিক্ষিত চাকরিপ্রার্থী হিসেবেই ধরতে হবে। বোর্ডকে রিপোর্ট জমা করার জন্য ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে।