কলকাতা

‘দেখতে গোলগাল, নাদুসনুদুস’, শুভেন্দুর ব্যঙ্গচিত্রে তৈরি হোর্ডিংয়ে ছয়লাপ রাজ্য, বিরোধী দলনেতাকে ব্যঙ্গ করে আক্রমণ তৃণমূলের

ব্যঙ্গচিত্রে লেখা, “নিরুদ্দেশ সংবাদ”। কিন্তু কে নিরুদ্দেশ? হোর্ডিংয়ে সেই ব্যক্তির দৈহিক বর্ণনা দেওয়া। না সরাসরি কোনও ছবি নেই। ব্যবহার করা হয়েছে ব্যঙ্গচিত্র। আর সেই ব্যঙ্গচিত্র দেখে এটা স্পষ্ট যে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে উদ্দেশ্য করেই এই হোর্ডিং। তৃণমূল সোশ্যাল মিডিয়া ও আইটি সেলের তরফে শহরের নানান প্রান্তে এমনই হোর্ডিং লাগানো হয়েছে। তা নিয়ে প্রতিবাদ দেখিয়েছে বিজেপি।

গতকাল, বুধবার দুপুর থেকে বর্ধমান শহরের কার্জন গেট চত্বর, পারবীরহাটা মোড়-সহ তিনটি জায়গায় এই হোর্ডিং লাগানো হয়েছে। এই হোর্ডিংয়ের শিরোনাম করা হয়েছে, “নিরুদ্দেশ সংবাদ”। এরপর কোনও নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধানে যেভাবে পোস্টার লেখা হয় সেইভাবে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।

হোর্ডিংয়ে লেখা, “রূপ: দেখতে গোলগাল, নাদুসনাদুস। মেরুদণ্ড নেই। গলায় গেরুয়া উত্তরীয়। ঠিকানা: বাড়ি কাঁথিতে। অসুখেরও উল্লেখ রয়েছে সেখানে। লেখা হয়েছে, অসুখ: ভোট এলেই লাইট বন্ধ করে দেন। নিয়মিত দুশো দুশো চিৎকার করে মধ্যরাতে ঘুম থেকে উঠে পড়েন। অকারণ ভাট বকতে ভালবাসেন। ডিসেম্বরে সরকার ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন, তারপর লজ্জাবতী হয়ে মুখ লুকোন। ক্যামেরায় ঠোঙা মুড়িয়ে ঘুষ নিতে দেখা যায়। এখানেই শেষ নয়। হোর্ডিংয়ে আরও লেখা হয়েছে, বিশেষ চিহ্ন: অভিষেক শব্দটি শুনলেই দাঁত খিঁচিয়ে কামড়াতে আসেন। বেগম বেগম করে হেঁচকি তোলেন। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দেওয়া হলে বিরোধিতা করেন, কিন্তু গ্যাসের দাম বাড়লে চুপ থাকেন”। শুধু তাই-ই নয়, এই লেখার পাশে একটি কার্টুন বা ব্যঙ্গচিত্র দিয়ে নিচে লেখা রয়েছে, “এমন কোনও ব্যক্তিকে খুঁজে পেলে দ্রুত সন্ধান দিন”।

‘দেখতে গোলগাল, নাদুসনুদুস’, শুভেন্দুর ব্যঙ্গচিত্রে তৈরি হোর্ডিংয়ে ছয়লাপ রাজ্য, বিরোধী দলনেতাকে ব্যঙ্গ করে আক্রমণ তৃণমূলের 2

এই হোর্ডিং প্রকাশ্যে আসতেই এর বিরোধিতা করেন বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি শ্যামল রায়, যুব মোর্চার জেলা সভাপতি পিন্টু সাম ও অন্যান্য বিজেপি নেতারা। তৃণমূলের এই কাজকে অপসংস্কৃতি বলে দেগেছে গেরুয়া শিবির। এই হোর্ডিং প্রসঙ্গে শ্যামল রায় বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী যতদিন ওদের দলে ছিল তখন ভাল ছিল। এখন বিরোধী দলনেতা হয়ে তৃণমূলের ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু। আর তাই এখন এমন কুৎসা করছে”।

পালটা হোর্ডিং টাঙানোর হুঁশিয়ারি দেন শ্যামল রায়। তিনি বলেন, “অবিলম্বে এই হোর্ডিং খোলা না হলে বৃহস্পতিবার আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে পোস্টার দেবো। তখন সামলাতে পারবে তো তৃণমূল”। এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে বেশ কিছু কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন ওই বিজেপি নেতা। “ঠাকুর ঘরে কে রে? আমি তো কলা খায়নি”।

বলে রাখি, গত ১ ডিসেম্বর দেবাংশু ভট্টাচার্যকে দলের সোশ্যাল মিডিয়া ও আইটি সেলের রাজ্যের ইনচার্জ করে তৃণমূল। আর এরপরই গোটা রাজ্য এই হোর্ডিংয়ে ছয়লাপ। এই পোস্টার নিয়ে দেবাংশুর বক্তব্য, “আমরা কারও নাম করছি না। কিন্তু ১২, ১৪ আর ২১ তারিখ পেরিয়ে যাওয়ার পর একজনের কথা খুব মনে পড়ছে। দু-তিন মাস ধরে বড় বড় হুংকার দিচ্ছিল এক ব্যক্তি। হঠাৎ করে সেই ব্যক্তি কোথায় হারিয়ে গেল? সাধারণ মানুষ নিজ দায়িত্বে সেই ব্যক্তিকে খুঁজে দেবেন”।

Back to top button
%d bloggers like this: