দেশ

ফের অসহায়ত্বের ছবি! মেলেনি অ্যাম্বুলেন্স, মৃত মেয়ের দেহ বাইকে চাপিয়েই ফিরলেন বাবা, ফিরল কালিয়াগঞ্জের স্মৃতি

ফের এক ঘটনা আরও একবার মনে করাল কালিয়াগঞ্জের ঘটনাকে। দু’টো ঘটনার মধ্যে কোনও ফারাক নেই। দু’জায়গাতেই উঠে এসেছে অমানবিকতার ছবি। টাকার অভাবে এক বাবা তাঁর পাঁচ মাসের শিশুকে নিয়ে ফিরলেন ব্যাগে ভরে আর এক বাবা সেই টাকারই অভাবে মৃত মেয়ের দেহ বয়ে আনলেন বাইকে চাপিয়ে। দু’ক্ষেত্রেই চরম অসহায়ত্বের ছবি ফুটে উঠেছে।

পাঁচমাসের পুত্র সন্তানের মৃতদেহ অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে ফেরার জন্য আট হাজার টাকা চেয়েছিল অ্যাম্বুলেন্স। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিক গরীব বাবার কাছে সেই টাকা দেওয়া ক্ষমতা ছিল না। তাই বাধ্য হয়েই সন্তানের দেহ ব্যাগে ভরে নিয়ে ফিরতে হয় কালিয়াগঞ্জের অসীম দেবশর্মাকে। সেই একই অসহায়ত্বের ছবি ফুটে উঠল মধ্যপ্রদেশের শাহদোলে। সেখানেও টাকা অভাবে মেয়ের মৃতদেহ বাইকে চাপিয়ে ফিরলেন বাবা।

শাহদোল থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরের কোটা গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মণ। সম্প্রতি তাঁর ১৩ বছরের কন্যা মাধুরী সিকেল সেল অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত হয়। মেয়েকে শাহদোলের এক সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু গত সোমবার রাতে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর মেয়ের।

মেয়ের দেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি অ্যাম্বুলেন্স চেয়েছিলেন লক্ষ্মণ। অভিযোগ, তাঁর বাড়ি হাসপাতাল থেকে ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে না হওয়ায় তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্স দিতে রাজি হয় নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শববাহী গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে যাওয়ার মতো টাকাও ছিল না তাঁর কাছে। তাই উপায় না দেখে মেয়ের দেহ মোটরবাইকে চাপিয়ে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন অসহায় লক্ষ্মণ।

লক্ষ্মণ বলেন, “আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি অ্যাম্বুল্যান্স চেয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা জানান যে, ১৫ কিলোমিটারের বেশি দূরে বাড়ি হলে অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়া যায় না। আমাদের নিজেদের ব্যবস্থা করে নিতে বলে। টাকার অভাব। কিন্তু মেয়েটাকে তো বাড়ি নিয়ে যেতে হবে। তাই মেয়ের দেহ মোটরবাইকে ঝুলিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই”।

লক্ষ্মণের এই অসহায়ত্বের খবর পেয়ে শাহদোলের জেলাশাসক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। লক্ষ্মণের বাড়ি থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার আগে তাঁকে ওইভাবে মেয়ের দেহ নিয়ে যেতে দেখেন ওই জেলাশাসক। সেই সময় লক্ষ্মণের মেয়ের দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি গাড়ির ব্যবস্থা করে দেন তিনি।

Back to top button
%d bloggers like this: