সংসদের বিশেষ অধিবেশনে নেহরুর প্রশংসা মোদীর গলায়, স্মরণ করলেন ‘নেহরুর অনন্য অবদান’, তবে সমালোচনা ইন্দিরা-মনমোহনের জমানার

সংসদের এক অধ্যায় শেষ হতে চলেছে। আজ, সোমবার ছিল সংসদে বিশেষ অধিবেশন। এদিন অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেন যে ব্রিটিশদের তৈরি সংসদ ভবনে আজই শেষ অধিবেশন। আগামীকাল, মঙ্গলবার থেকে অধিবেশন বসবে নতুন সংসদ ভবনে। এদিন অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মোদীর মুখে শোনা যায় নেহরু বন্দনা। মনমোহন সিংয়ের জমানার কথাও এদিন উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন অধিবেশনের শুরুতে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা দিল্লিতে সফল জি-২০ সম্মেলনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রীও ভাষণের শুরুতেই জি-২০’র সাফল্য তুলে ধরে বলেন, এই সাফল্য কোনও ব্যক্তি বা দলের নয়। এই সাফল্য দেশের।
জওহরলাল নেহরুর প্রশংসা মোদীর
এরপর প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যে উঠে আসে সংসদের সূচনা অধ্যায়ের কথা। দেশের সমস্ত প্রধানমন্ত্রীদের কথা এক এক করে উল্লেখ করেন তিনি। স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু থেকে শুরু করে লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, পিভি নরসিমহা রাও, অটল বিহারী বাজপেয়ীর কথা উল্লেখ করেন মোদী। বলেন, “জওহরলাল নেহরুর ‘ইন দ্য স্ট্রোক অব মিডনাইট’ বক্তব্য গোটা দেশকে অনুপ্রাণিত করেছিল। অটল বিহারী বাজপেয়ী বলেছিলেন, সরকার আসবে, যাবে, কিন্তু দেশকে থাকতে হবে। এই বক্তব্যগুলি সবসময় মনে থাকবে”।
এদিন বি আর আম্বেদকরের দৃষ্টিভঙ্গি, দেশকে শিল্পায়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তাঁর চিন্তাধারার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “এই সংসদ ভবন অনেক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের সাক্ষী রয়েছে। ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্য়াহার, এক র্যাঙ্ক-এক পেনশন, জিএসটির মতো একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আবার এই সংসদ ভবনই প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সময়কালে ক্যাশ ফর ভোটের মতো দুর্নীতিরও সাক্ষী থেকেছে। এই সংসদ যেমন চারজন সাংসদের দলকে ক্ষমতায় বসে থাকতে দেখেছে, তেমনই ১০০ জন সাংসদ নিয়েও দলকে বিরোধীদের আসনে বসে থাকতে দেখেছে”।
মোদীর বক্তব্যে উঠে আসে মনমোহন সিংয়ের সমালোচনা
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলন ও সেই যুদ্ধে সমর্থনের মতো ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত যেমন এই সংসদে নেওয়া হয়েছিল, তেমন জরুরি অবস্থা চলাকালীন গণতন্ত্রের উপর হামলাও করা হয়েছিল। এই সংসদ ভবনেই ভোটদানের বয়স ১৮ বছরে কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। নরসিমহা রাওয়ের সরকার পুরনো অর্থনীতি ছেড়ে নতুন অর্থনীতি গ্রহণ করেছিলেন। আবার অটল বিহারী বাজপেয়ীর সময়ে সর্বশিক্ষা অভিযান, নিউক্লিয়ার স্পেসের মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। মনমোহনজীর সরকারে ক্যাশ ফর ভোটের মতো দুর্নীতির ঘটনারও সাক্ষী রয়েছে এই সংসদ। এই সদনেই আবার গরিবদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের সিদ্ধান্তও এই সদনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় গৃহীত হয়েছিল”।