পুরসভায় চাকরির নামে তুলেছিলেন ৪০ কোটি টাকা, একা নেন নি সেই টাকা, ইডি-কে একাধিক প্রভাবশালীদের নাম জানালেন অয়ন

নিয়োগ দুর্নীতির (recruitment scam) তদন্ত করতে গিয়েই ইডি-র জালে গ্রেফতার হন হুগলির বহিষ্কৃত তৃণমূল যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় (Shantanu Banerjee) ঘনিষ্ঠ অয়ন শীল (Ayan Shil)। তাকে গ্রেফতারের পর থেকেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে ইডি (Enforcement Directorate)। এবার মিলল আরও এক বিস্ফোরক তথ্য। ইডি-র দাবী, পুরসভায় চাকরি দেওয়ার নাম করে ৪০ কোটি টাকা তুলেছিলেন অয়ন। নিজেই একথা জেরাতে স্বীকার করেছেন তিনি।
ইডি সূত্রে খবর, অয়ন এই ৪০ কোটি টাকা তোলার কথা স্বীকার করলেও, তিনি একা সেই টাকা পান নি বলে দাবী তাঁর। অয়নের বয়ান অনুযায়ী, এই টাকার ২০-২৫ শতাংশ অর্থাৎ ৮ থেকে ১০ কোটি টাকা তিনি কমিশন পেয়েছিলেন আর বাকি টাকা চলে গিয়েছিল সব প্রভাবশালীদের কাছে। রাজ্যের নানান পুরসভায় চাকরি দেওয়ার নামে এই টাকা তোলা হয়েছিল বলে ইডি-র জেরায় জানিয়েছেন অয়ন।
ইডি সূত্রে খবর, অয়ন শীলকে জেরা করে যে তথ্য মিলেছে, তার উপর ভিত্তি করে প্রভাবশালীদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই তালিকা ধরেই আগামী দিনে তাদের তলব করতে পারে ইডি। অয়নকে গ্রেফতারির পরই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা দাবী করেছিলেন যে শুধুমাত্র শিক্ষাক্ষেত্রেই নয়, রাজ্যের অন্যান্য দফতরের নিয়োগেও দুর্নীতি হয়েছে।
বলে রাখি, প্রায় ৩৭ ঘণ্টা ম্যারাথন জেরার পর সল্টলেকের অফিস থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল অয়ন শীলকে। ইডি-র দাবী নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় অয়নের সংস্থার মাধ্যমেই টাকা বিনিয়োগ করত। অয়নকে গ্রেফতার করার পর ইডি এও দাবী করে যে ‘সোনার খনি’র হদিশ মিলেছে।
অয়নের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে রাজ্যের ৬০টি পুরসভার নিয়োগের নথি উদ্ধার হয়। এই ৬০টি পুরসভাতেই নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে বলে জানা যায়। অয়নকে জেরা করে এরপর আরও কোনও নতুন তথ্য মেলে কী না, এখন সেটাই দেখার।
তবে ইডির পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে গতি আনতে বেশ কোমর বেঁধেছে সিবিআইও। তদন্তে গতি আনার জন্য ৭ সদস্যের বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে সিবিআইয়ের তরফে। দ্রুত নিজাম প্যালেসের দুর্নীতি দমন শাখার দফতরে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের। নতুন টাস্ক ফোর্সে রয়েছেন এসপি পদমর্যাদার ১ জন ও ডিএসপি পদমর্যাদার ৩ জন অফিসার। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নতুন করে কোনও তথ্য মেলে কী না, সেটাই সেই অপেক্ষাতেই রাজ্যবাসী।