মন্ত্রীর মেয়ের বিরুদ্ধে লড়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবে স্কুলে যোগ, ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার শিক্ষা দেব পড়ুয়াদের’, বললেন ববিতা

লড়াইটা খুব একটা সহজ একেবারেই ছিল না। কারণ তাঁর এই লড়াই ছিল রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর মেয়ের বিরুদ্ধে। তবে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর জয় হয়েছে সত্যের। তাঁর অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছিলেন অন্য একজন। তবে শেষ পর্যন্ত সত্যকে প্রতিষ্ঠা করে আদালতের সাহায্যে সুবিচার পেয়েছেন তিনি। ঠিকই ধরেছেন, কথা হচ্ছে ববিতা সরকারকে নিয়েই।
আজ, সোমবার কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা হিসাবে কাজে যোগ দিলেন ববিতা। এই স্কুলেই আগে চাকরি করতেন রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী। তাঁর সেই নিয়োগকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ববিতা। নিয়োগে দুর্নীতির দায়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি থেকে বরখাস্ত হন অঙ্কিতা অধিকারী।
আদালতের নির্দেশ মতোই আজ, সোমবার অঙ্কিতার জায়গায় স্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন ববিতা সরকার। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসাবে যোগ দিয়ে ববিতা বলেন, “দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের অবসান হল। আমি খুব খুশি হয়েছি। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই স্কুলে যোগ দিয়েছি। আগামী দিনে দায়িত্ব সহকারে এই কাজ করব”।
অঙ্কিতার বিরুদ্ধে লড়াই করে জয় ছিনিয়ে এনেছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে ববিতা বলেন, “আমি কারও ক্ষমতার বিরুদ্ধে লড়াই করিনি। যোগ্যতার প্রশ্নে লড়াই করেছি। কলকাতা হাইকোর্ট আমাকে আমার অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। অঙ্কিতাকে আমার কোনও বার্তা দেওয়ার নেই। তিনি তাঁর মতো কাজ করেছেন। আমি আমার মতো কাজ করে যাব”।
আদালতের নির্দেশেই চাকরি বাতিল হয়েছে অঙ্কিতার। এমনকি, তাঁর ৪১ মাসের বেতনও ফেরত দিতে হয়েছে তাঁকে। এখন কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের নতুন শিক্ষিকা হলেন ববিতা। পড়ুয়াদের প্রতি তাঁর একটাই বার্তা, “আমি এতদিন ধরে যে শিক্ষা পেয়েছি, তা ছাত্রীদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। ছাত্রীরাও যাতে ন্যায়ের পথে চলতে পারে, অন্যায় দেখে যাতে তারাও প্রতিবাদ করতে পারে সেই শিক্ষা দেব”।